অর্জুন সিং-কে মহাভারতের অর্জুনের সঙ্গে তুলনা রাজ্যপালের!

তাঁর বলা প্রত্যেকটা বাক্যের শেষেই অসম্ভব হাততালি, ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকানি।

অর্জুন সিং-কে মহাভারতের অর্জুনের সঙ্গে তুলনা রাজ্যপালের!
অর্জুন সিং-কে মহাভারতের অর্জুনের সঙ্গে তুলনা রাজ্যপালের!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 25, 2020 | 5:11 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে সাংসদ অর্জুন সিংকে মহাভারতের অর্জুনের সঙ্গে তুলনা করলেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Governor Jagdeep Dhankar)। বললেন, “ওঁকে যখন দেখি, মহাভারতের কথা মনে পড়ে।” রাজ্যপালের এই একটা মন্তব্যেই রাজনৈতিক মহল থেকে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন।

উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলের সুন্দিয়াপাড়ায় একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আপাত নিখাদ একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ। কিন্তু সেখান থেকেই রাজ্যপাল দিলেন একের পর এক বার্তা, যা মূলত সেই মঞ্চে সম্পূর্ণভাবে অপ্রাসঙ্গিক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, রাজ্যপালের গলাতে এদিন প্রথম থেকে ধরা পড়েছে আক্রমণাত্মক সুর। মেজাজেও ছিল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছাপ। শুরুতে রাজ্যপাল বললেন, “৩০ জুলাই ২০১৯ সালে শপথ নিয়ে রাজ্যপালের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। ন্যায় বিচারের জন্য ল়ড়াই করবে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে এখানকার মানুষের সেবা করব।” রাজ্যপালকে কেবল দেখতেই সভাস্থলে ছিল অত্যুত্সাহী মানুষের ভিড়। সেই পরিস্থিতি রাজ্যপালের এহেন মেজাজ দেখে যেন উত্তেজনার স্ফূরণ ঘটেছে প্রত্যেকের মধ্যে। তাঁর বলা প্রত্যেকটা বাক্যের শেষেই অসম্ভব হাততালি, ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকানি।

রাজ্যপাল বললেন, “আপনাদের এখানকার সমস্ত খবর রয়েছে আমার কাছে। এমন কোনও ঘটনা ঘটবে না, যার কৈফিয়ত চাওয়া হবে না। সব ঘটনারই জবাবদিহি করতে হবে।” উল্লেখ্য, বারাকপুর-জগদ্দল, কাঁচড়াপাড়া-হালিশহর এই জোনটি নানা সময়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষের কারণে শিরোনামে থাকে। সেই মাটিতে দাঁড়িয়েই রাজ্যপালের এহেন মন্তব্য বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

কথার পৃষ্ঠে রাজ্যপাল তোলেন বারাকপুরের সাংসদের প্রসঙ্গ। নাম না করেই বলেন, “আপনাদের সাংসদের নামের অর্থ অনেক গভীর। ওঁকে যখন দেখি, মহাভারতের কথা মনে পড়ে। এক অর্জুন মহাভারতে তাঁর নিজের লক্ষ্য দেখিয়েছেন, আরেকজনের বাকি আছে।” কথাগুলো বলার সময়ে রাজ্যপালের মুখে ছিল অর্থবহ হাসি, অন্তত এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: লোকসভায় বিষ্ণুপুর থেকে তাঁকে জেতানোর কাজ করেছিলেন শুভেন্দুই, বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি সৌমিত্রর

তবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, রাজ্যপাল কী কোনও মঞ্চে দাঁড়িয়ে কোনও বিশেষ দলের জনপ্রতিনিধির সম্পর্কে এমন মন্তব্য করতে পারেন? এটা কি আদৌ তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতার মধ্যে পড়ে? রাজ্যের রাজ্যপাল সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সম্পর্কে এহেন মন্তব্য করেছেন, সেই দৃষ্টান্ত কস্মিনকালে কবে ঘটেছে, তা স্মৃতি হাতড়েও মনে করতে পারছেন না বিশ্লেষকরা। এর আগে একাধিক বিষয়ে শাসকদলকে বিঁধে টুইট করেছেন রাজ্যপাল। প্রশাসনকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন, প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে। তবে রাজ্যপালের এদিনের মন্তব্যে যেন বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের তাঁর দুর্বলতার আভাস পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।