সোদপুর: অমরনাথ ধামে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের উত্তর নাটগড়ের একই পরিবারের তিন জন। সোদপুরের বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র দে ব্যাঙ্কে কর্মরত। গত ৪ জুলাই স্ত্রী রুমা দে এবং ছেলে সাগর দে-কে সঙ্গে নিয়ে তিনি অমরনাথ ধামের উদ্দেশে রওনা দেন। ইতিমধ্যেই মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে আসে অমরনাথে। অমরনাথ যাত্রা করতে গিয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। প্রচুর মানুষ নিখোঁজ হয়ে পড়েন। তার মধ্যে রয়েছে এ রাজ্যের প্রচুর বাসিন্দাও। সোদপুরের ওই পরিবারের তিনজনেরও এখনও অবধি খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকেরা বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁদের সঙ্গে। সোমবার সকালে তাঁদের খবর পান পরিবারের লোকেরা। জানা গিয়েছে, নিখোঁজদের উদ্ধার করে পঞ্জাব থেকে এয়ারবাসে সিমলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সুস্থ আছেন নারায়ণচন্দ্র দে, রুমা দে এবং সাগর দে।
অমরনাথ ধামে ঘুরতে যাবার পর এ মাসের ৭ তারিখ পরিবারের সঙ্গে শেষ বার কথা হয়েছিল।গত ৮ জুলাই ঘটে বিপর্যয়ের ঘটনা। এই ঘটনা ঘটার পর থেকেই ওই পরিবারের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ করতে পারছেন না সোদপুরে থাকা তাঁর পরিবারের লোকজনেরা। ঘটনার পর থেকে পরিবারের লোকজনেরা যথেষ্ট উৎকণ্ঠায় ছিলেন। কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরিবারের লোকজন আবেদন জানিয়েছেন। এর পরই সোমবার খবর আসায় কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন পরিবারের লোকেরা। জানা গিয়েছে, ওই তিন জন সুস্থ রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে পঞ্জাব থেকে সিমলা আনা হচ্ছে।
সোমবার ভোর রাতে বারুইপুরের বাড়িতে ফিরল অমরনাথ যাত্রায় গিয়ে মৃত ছাত্রীর দেহ। অমরনাথ বিপর্যয়ের জেরে প্রাণ হারিয়ে ছিলেন বারুইপুরের ছাত্রী বর্ষা মুহুরী। চলতি মাসের ১ তারিখে বারুইপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চন্দন মুহুরীর স্ত্রী নিবেদিতা মুহুরী, মেয়ে বর্ষা ও শ্যালক সুব্রত চৌধুরী সঙ্গে রওনা দিয়েছিল অমরনাথের উদ্দেশ্যে। সঙ্গে ছিল পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিশালক্ষী তলা এলাকার বাসিন্দা উজ্জ্বল মিত্র ও তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে। সেই দলে ছিলেন মোট ৭ জন। ৫ তারিখ তাঁরা জম্মু হয়ে পহেলগাঁওয়ে পৌঁছন। ৭ তারিখ শুরু করেন অমরনাথ যাত্রা। কিন্তু শুরু থেকেই প্রতিকূল আবহাওয়া সঙ্গী হয়েছিল তাঁদের। যে সময় হড়পা বান আসে তখন মাকে বাঁচাতে গিয়ে স্রোতে পড়ে যান বর্ষা। তারপর থেকে খোঁজ মেলেনি তাঁর। পরে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে। অমরনাথ যাত্রায় গিয়ে অকালে মৃত্যু হওয়া বর্ষা মুহুরির কফিনবন্দি দেহ ফিরেছে সোমবার ভোরে। দেহ আসার অপেক্ষায় রাতভর জেগে ছিলেন তাঁর প্রতিবেশীরা। ছিলেন বারুইপুর পুরসভার স্থানীয় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিকাশ দত্ত থেকে ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাস। সোমবার বারুইপুরের কীর্তনখোলা শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে মৃত ওই ছাত্রীর।