
বসিরহাট: বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড সব করিয়েছেন। এই অভিযোগ তুলে অনেকদিন ধরেই সরব বিজেপি। একাধিক ঘটনাও সামনে এসেছে। এবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের এক ব্যক্তি অভিযোগ করলেন, তাঁর অজান্তেই এক বাংলাদেশি যুবক তাঁকে ‘বাবা’ দেখিয়ে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড তৈরি করিয়েছেন। পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। এখন নাম কাটাতে এসআইআর-ই ভরসা জিয়াদ আলি দফাদারের।
বসিরহাটের নিমদাড়িয়া কোদালিয়া পঞ্চায়েতের ৭৫ নম্বর বুথের বাসিন্দা জিয়াদ আলি দফাদার। বছর চারেক আগে হঠাৎই তিনি দেখেন, ভোটার লিস্টে মাহাবুর দফাদার নামে এক যুবকের নাম রয়েছে। যেখানে জিয়াদ আলি দফাদারকে বাবা পরিচয় দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখেন, তাঁকে বাবা সাজিয়ে শুধু ভোটার কার্ড নয়, আধার কার্ড-সহ সমস্ত রকম সরকারি নথি ওই যুবক বানিয়ে ফেলেছেন। এরপর জিয়াদ আলি দফাদার বসিরহাট ব্লক অফিসে এবং বসিরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর ২০২৪ সালে আবারও তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তাতেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হতেই আশায় বুক বেঁধেছেন জিয়াদ। এসআইআর প্রক্রিয়ায় যাতে ওই যুবকের পরিচয়পত্র থেকে তাঁর নাম সরানো হয়, সেজন্য তিনি এবারও বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জিয়াদ আলি দফাদার বলেন, “ওই যুবক আমার কেউ না। অথচ আমাকে বাবা সাজিয়েছে। সব জায়গায় আমার নাম বাবা হিসেবে দেখিয়েছে। ও তো উগ্রপন্থী হতে পারে।” কিন্তু, তাঁর আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ওই যুবক পেলেন কীভাবে? জিয়াদ বলেন, “আমি জানতাম না। আমার পরিবারের কাছ থেকে আমার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড চেয়ে নিয়েছিল একটি ব্যাঙ্কে টাকা নেবে বলে।” তারপরই কার্ডগুলি ব্যবহার করে ওই যুবক কার্ড বানান বলে তাঁর অভিযোগ।
অভিযুক্ত মাহাবুর দফাদারের বাড়ি গেলে তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রী রোকিয়া বিবি বলেন, “তখন বুঝতে পারিনি। করে ফেলেছিলাম।” তিনি স্বীকার করেন যে মাহাবুর দফাদারের বাড়ি বাংলাদেশের ডুমুরিয়া জেলায়। এসআইআর ফর্ম এখনও তাঁরা জমা দেননি বলে রোকিয়া বিবি জানান।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় মাহাবুর বাড়িও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মাহাবুরের পরিচয়পত্র তৈরি নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন বিজেপির জেলা সভাপতি সুকল্যাণ বৈদ্য। তিনি বলেন, “রাজ্যের শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদত ছাড়া এটা সম্ভব নয়। এরকম অনেক ঘটনা বসিরহাটে রয়েছে। ভুয়ো ভোটাররাই তৃণমূলের সম্পদ।”