
উত্তর ২৪ পরগনা: NRC আতঙ্কে আগরপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ করের আত্মহত্যা! এই অভিযোগ ঘিরে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে প্রদীপ করের। সেই তালিকাও সামনে এনেছে বিজেপি। বিজেপির দাবি, কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রদীপের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়ার কোনও কারণ নেই। অবসাদের কারণেই প্রদীপ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি বিজেপির।
পানিহাটির বিজেপি নেতা চণ্ডীচরণ রায় বলেন, “তৃণমূল সরকার আগেও এভাবে অপপ্রচার করে এসেছে। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য এই ধরনের প্রচেষ্টা চালায়। যদি কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকলেই হবে, সেখানে ওনার তো নাম রয়েছে। আমি যতদূর জানি, উনি কিছুটা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ওনার সমস্যা হচ্ছিল বলে শুনেছি।”
হাতের লেখা নিয়েও ধন্দ প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রদীপ করের ডান হাতের চারটে আঙুল ছিল না, কোনও একটি দুর্ঘটনায় আঙুল কাটা যায়, সেটি জানিয়েছেন তাঁরই পরিবারের সদস্য। প্রদীপের ভগ্নিপতি উত্তম হাজরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনেও ভোট দিয়েছেন প্রদীপ। সেক্ষেত্রে বিজেপির দাবি, এই উদ্ধার হওয়া নোটের হাতের লেখাও যাচাই করে দেখা হোক। পাশাপাশি আদালতের প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে এই ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে তৃণমূলের সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “বিজেপি কি ওনার মনের ভিতর জেনে নিলেন? বিজেপি কি বাড়িতে গিয়ে ভোটার লিস্ট দিয়ে এসেছিল? বিজেপির কাছে থাকতে পারে। কিন্তু এখন কত মানুষ জানেন, কীভাবে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা বার করা যায়! বিজেপি আর নির্বাচন কমিশন মিলে মানুষের মধ্যে ত্রাস তৈরি করেছে।”
রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ওটা ফলস কেস। ২০০২ সালে ওনার নাম ভোটার লিস্টে ছিল। ওনার পরিবারের সদস্যরা সব তৃণমূল করেন। ওনার কাছে তো CAA, NRC-র কোনও ব্যাপার নেই তো, আমার কাছে ওনার সিরিয়াল নম্বর, পার্ট নম্বর সব রয়েছে। আমি নিজে দেখেছি।”
সোমবার আগরপাড়ায় বছর সাতান্নর প্রৌঢ় প্রদীপ করের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়, যা নিয়ে তুঙ্গে রাজ্য রাজনীতি। পুলিশের দাবি, দেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। সেখানে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।’ এই খবর সামনে আসতেই সামাজিক মাধ্য়মে পোস্ট করে কেন্দ্র-কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠকে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বুধবার দুপুরে খোদ অভিষেক নিজেই যাচ্ছেন প্রদীপ করের বাড়িতে। মৃতের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।