উত্তর ২৪ পরগনা: ভাটপাড়া পুরসভার (Bhatpara Municipality) গুলিকাণ্ডের মাত্র চব্বিশ ঘণ্টা পরেই ইস্তফা দিলেন পুরসভার মুখ্য পৌরপ্রশাসক অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার, সন্ধ্য়াবেলায় ভাটপাড়া পুরসভার মধ্যেই গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। একটুর জন্য প্রাণে বাঁচেন ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর হিমাংশু সরকার। আহত হন ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটরের সহকারী সৌরভ দাস। এরপরেই, পদে ইস্তফা দিলেন অরুণবাবু।
পুর প্রশাসক মুকসুদ আলম এদিন বলেন, “ভাটপাড়া পুরসভায় গুলিকাণ্ডের জেরেই ইস্তফা দিলেন অরুণবাবু। বলেছেন, তাঁর শরীর খারাপ। এরপর এই ধরনের চাপ নেওয়া তাঁর পক্ষে কঠিন। তাই স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি। আমরা বুঝিয়েছি, তবে ওঁ ওঁর সিদ্ধান্ত বদলাতে নারাজ। চেষ্টা করব যাতে ওঁ ফের নিজের পদে ফিরে আসেন।” শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি। অরুণবাবুর সঙ্গে কথা বলব। ওঁকে কীভাবে ফেরানো যায় তা চেষ্টা করা হবে।”
ভাটপাড়া পুরসভা (Bhatpara Municipality) সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পুরসভার ভেতরেই গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ভাটপাড়া থানার প্রায় নাকের ডগায় এই সন্ত্রাসী হামলার জেরে রীতিমতো ত্রস্ত সকলে। ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুরকর্মীরাও। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চড়েছে রাজনীতির পারদও। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এই ঘটনাকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে আখ্যা দিলে পাল্টা তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক স্পষ্টই ব্যারাকপুর সাংসদের অঙ্গুলিহেলনেই এই আগ্রাসন চলছে। গুলিকাণ্ডে ইতিমধ্যেই জোর তদন্তে নেমেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে। কারা কারা এই ঘটনায় ওই জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, বরাবর ‘সংবেদনশীল এলাকা’ বলেই পরিচিত হয়েছে ভাটপাড়া। বোমাবাজি, গুলিবর্ষণের মতো ঘটনা এখানে নিত্যনৈমিত্তিক। এ হেন ভাটপাড়ার পুরপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা ছিল তৃণমূলের অন্দরে। কার্যত ভাটপাড়া পুরসভা কার দখলে থাকবে তা নিয়ে টালবাহানা কম হয়নি। জল গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। তৃণমূলের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপর নির্বাচন হয়ে ১৯-০ ফলে জয় দেখে ঘাসফুল। কিন্তু,পুরপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিলই।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছিল, মুখবন্ধ খামে রাজ্য নেতৃত্বের তরফে ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তির’ অরুণের নাম পাঠানো হয় জেলা নেতৃত্বের কাছে। সেই সঙ্গে কার্যত জোর দিয়ে জেলা নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছিলেন, যাঁর নামই ঘোষণা হোক, তাঁকে সমর্থন করতেই হবে সকলকে। এরপরেই, অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই অরুণ আজ পদে ইস্তফা দিতেই কার্যত শিয়রে বিপদ দেখছে তৃণমূল। পুরসভা (Bhatpara Municipality) সূত্রে খবর, প্রয়োজনে উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলা হবেও বলে জানা গিয়েছে। আরও পড়ুন: নাকের ডগায় থানা, পুরসভার ভেতরে চলল গুলি! ফের উত্তপ্ত ভাটপাড়া