
সন্দেশখালি: একসময় শেখ শাহজাহানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন ভোলানাথ ঘোষ। এতটাই ঘনিষ্ঠ যে ভোলানাথকে ‘বড় দা’ বলেই ডাকতেন শেখ শাহজাহান। সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শাহজাহানের অধিকাংশ ব্যবসা বাণিজ্য, আর্থিক লেনদেন- সবকিছুই নাকি দেখভাল করতেন এই ভোলানাথ ঘোষ। শাহজাহান ভোলা কে অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। আজ সেই ভোলানাথের গাড়ি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য সন্দেশখালিতে।
বুধবার সকালে ভোলানাথ, তাঁর ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যখন বসিরহাট আদালতের পথে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময়, একটি দশ চাকার ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ভোলা ঘোষের ছেলে ও তাঁর গাড়ির চালকের। আহত হন তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরে ভোলা ঘোষ অভিযোগ করেন, পরিকল্পনা করে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল তাঁকে। ট্রাকটি কে চালাচ্ছিলেন, সেটাও তিনি দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি ভোলার।
সূত্রের খবর, একসময় ঘনিষ্ঠতা থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিবু হাজরা এবং আলমগীর (শাহজাহানের ছোট ভাই) শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন। সূত্রের খবর, এরপর নানারকমভাবে ভোলানাথকে সরিয়ে নিজেদের জায়গা তৈরির মরিয়া চেষ্টা শুরু করেন শিবু। ভোলার বিরুদ্ধে দিনের পর দিন বিভিন্নভাবে মিথ্যা অভিযোগ এনে শাহজাহানের কান ভারি করতে শুরু করেন বলেও শোনা যায়। এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায়, ২০২০ সাল নাগাদ শাহজাহানের লোকজন ভোলার বাড়িঘর ভাঙচুর করে। তারপর থেকেই পরিবার নিয়ে এলাকাছাড়া ছিলেন ভোলা।
শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার পর ২০২৪ সালে আবার এলাকায় ফেরেন ভোলা ঘোষ। এলাকায় ফিরলেও ভোলা হয়ে উঠেছিলেন শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের অন্যতম টার্গেট। একসময়ের ‘রাইট হ্যান্ড’ ভোলা সিবিআই-কে শাহজাহান সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য, কোথায় কী সম্পত্তি আছে, অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন বলেই অনুমান। আর সেই কারণেই বেশ কয়েকবার তাঁর উপরে হামলার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। এমনকী এদিন ভোলার বড় ছেলেও একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে।।
অন্যদিকে, এদিন সকালে ভোলা ঘোষের গাড়িতে লরি ধাক্কা মারার পর স্থানীয় বাসিন্দা আলিম নামের একজনের নাম সামনে উঠে আসছে। বাইকে করে তিনি পালিয়ে যান বলেই দাবি। এই আলিম সিবিআই-এর তালিকায় ‘ওয়ান্টেড’ বলেই সূত্রের খবর।