বনগাঁ: ঠাকুরনগরে অমিত শাহের সভায় তাঁকে ঢুকতে বাধার মুখে পড়তে হয়। শেষে শুভেন্দু অধিকারীর হস্তক্ষেপে জট কাটলেও শুক্রবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে বনগাঁর বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। অভিযোগ করেন, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের হয়ে কাজ করছেন। এমনকি তিনি বিজেপি করেন, শান্তনু ঠাকুরের দল নয় বলেও ক্ষোভ উগরে দেন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম জানানো বিশ্বজিৎ। এই প্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব দিলেন বনগাঁর সাংসদ তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের নেতা শান্তনু ঠাকুরও।
শান্তুনুর দাবি, “বিশ্বজিত দাসকে আমার বিরুদ্ধে বলার জন্য কেউ প্রভাবিত করছেন।’’ কিন্তু কারা প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ককে? তা অবশ্য খোলসা করেননি শান্তুনু। এ নিয়ে বিশ্বজিতের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: শাহি সভায় ঢুকতে না পেরে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন উত্তর বনগাঁর বিধায়ক, শেষে ‘ত্রাতা’ শুভেন্দু
তবে এখানেই শেষ নয় এই বাকযুদ্ধ, এদিন সকালে নাম না করে শান্তনুকে নিশানা করে বিশ্বজিৎ বলেছেন, বিজেপিকে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করছেন তিনি।যার প্রেক্ষিতে শান্তনুর পাল্টা তোপ, এই কথা বলে পরোক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অপমান করেছেন বিশ্বজিৎ। কীভাবে? শান্তনুর কথায়, ‘সিএএ (CAA) আমি আনিনি, এনেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’ তিনি যোগ করেন, দল মনে করেছে বলেই মতুয়াদের বার্তা দিতে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু বিজেপি নেতা হিসেবে তো বটেই জনপ্রতিনিধি হয়ে বিশ্বজিতের মন্তব্য আপত্তিকর বলে দাবি করেন শান্তনু।
আরও পড়ুন: বিজেপি বিধায়ক প্রণাম ঠুকতেই মমতা বললেন, ‘কী রে কিছু ভাবলি, আর তো সময় নেই’
এদিকে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ ও বনগাঁ উত্তরের বিধায়কের এই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের বাতাবরণে বিশ্বজিতের তৃণমূলে ‘ঘরওয়াপসি’-র জল্পনা আরও গতি পাচ্ছে। তিনি তৃণমূলে যাচ্ছেন কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিক বৈঠকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন বিশ্বজিৎ দাস। অন্যদিকে, স্থানীয় বিজেপির অন্দরে খবর, একুশের ভোটে বনগাঁ উত্তর থেকে নিজের পছন্দের প্রার্থী দিতে চাইছেন শান্তনু। বনগাঁ জুড়ে তিনি আসলে একাধিপত্য কায়েম করতে চান বলেও অনেকের মত। এই প্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে বিশ্বজিতের প্রণাম করা এবং মমতার বলা ‘কী রে বিশ্বজিৎ, ডিসিশন নিলি?’ – রাজ্য রাজনীতির আলোচনার শিরোনামে চলে আসে। ভোটের আগে যেভাবে প্রায় প্রতিদিনই তৃণমূল ও বিজেপির নেতামন্ত্রি, বিধায়ক-সাংসদরা শিবির বদলাচ্ছেন সেখানে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কের আকচা-আকচি ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।