উত্তর ২৪ পরগনা: বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর (Arjun Singh) বাড়ির সামনে বোমাবাজির ঘটনায় শুক্রবার সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে এলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ঘুরে দেখলেন বাড়ির আশেপাশের এলাকা। এরপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাংসদের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনায় সরাসরি এনআইএ (NIA) তদন্তের দাবি করলেন অধিকারী পুত্র।
এদিন, বিজেপি বিধায়ক বলেন, “সাংসদের বাড়িতে যেভাবে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে তা ন্যাক্কারজনক। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের জেরেই এই বোমাবাজির ঘটনা। আজ শুনলাম এখানে এনআইএ-র তদন্তকারীরা এসেছিলেন। আমি খুব খুশি। আমি চাই, এই সব দোষীদের শাস্তি হোক। মুখ্য়মন্ত্রী কোনও পদক্ষেপ করছেন না। জাতীয় সংস্থার গোয়েন্দারা যখন দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন সেখানে আর আলাদা করে আমার বলার কিছু নেই।”
গত বুধবার, সাতসকালে সিআইএসএফ প্রহরার দেড় ফুটের মধ্যেই সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনার ঘটে। ঘটনায় সাংসদের নিরাপত্তা নিয়েই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। তবে এই প্রথমবার নয়, ভোট পরবর্তী পর্যায়ে জুলাই মাসেও অর্জুনের বাড়িতে বোমাবাজি হয়। সিআইএসএফ- এর উপস্থিতিতেই বারে বারে এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে সাংসদ অর্জুন সিং এবং তাঁর পুত্র বিধায়ক পবন সিং-এর নিরাপত্তা নিয়ে। এই প্রেক্ষিতে অর্জুনের মন্তব্য, “অমিত শাহ ফোন করে খবর নিয়েছেন। এবার আমার সেল্ফ ডিফেন্সের সময় এসেছে। নিজের আত্মরক্ষা নিজেকেই করতে হবে।”
উল্লেখ্য, সাংসদ অর্জুন সিং ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। আর তাঁর ছেলে বিধায়ক পবন সিং ওয়াই ক্যাটাগরি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে সিআইএসএফ (CISF)। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সাংসদের বাড়িতে এবং তার বাড়ির দরজায় মাছিও বসতে পারে না। কেউ প্রবেশ করতে গেলে তার মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেকিং করা হয়।সেই সব নিরাপত্তার বেড়াজাল পেরিয়ে তবেই সবার তবেই প্রবেশের অনুমতি মেলে। এর আগেও তাঁর বাড়ির সামনে হামলার ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন অর্জুন। এ দিনের ঘটনাতেও তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি।
এদিকে সাংসদের বাড়ির সামনে থাকে ‘নো পার্কিং জোন’। সেখানে সাধারণের প্রবেশও নিষিদ্ধ। এই অবস্থায় দুষ্কৃতীরা কীভাবে বারে বারে বোমাবাজি করে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (উত্তর) শ্রীহরি পাণ্ডে জানান, দুইজনকে এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে চায়ের দোকানে মারামারি নিয়ে ঘটনার সুত্রপাত বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান তদন্তের জন্য প্রয়োজনে সিআইএসএফ-কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই বোমাবাজির ঘটনায় অর্জুনের অবশ্য দাবি, ভবানীপুরের ইলেকশনের অবজারভার করেছে দল। তাই জন্য তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগেও ১১ বার তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে। বারবার হামলার কারণ তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি আরও যোগ করেন, তবে যে ধরনের বোমা চলেছে তা অতি সক্রিয় বোমা। তাই এনআইএ (NIA)-র তদন্তের দাবি জানান সাংসদ অর্জুন সিং।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় জানিয়েছেন দল যদি অর্জুনকে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অবজারভার করে তাহলে বিজেপি দলের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে ও অর্জুন সিং অবজারভার হওয়ার ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের ব্যবধান অনেক গুণ বাড়বে।
সাংসদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় টুইটে সমালোচনা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর দাবি, রাজ্যে যে এখনও হিংসা অব্যাহত, সাংসদের বাড়িতেই সাতসকালে বোমাবাজিতেই প্রমাণ হল। এর থেকে ভয়ঙ্কর আর কী আছে! সাংসদের নিরাপত্তা ব্য়বস্থা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কীভাবে কুকুরের বেল্ট দিয়ে স্ত্রীকে খুন করেন বিপ্লব? ঘটনার পুনর্নিমাণে ধৃতের ফ্ল্যাটেই গোয়েন্দারা
আরও পড়ুন: Exclusive: ফের কি ফুল বদল? খবর শুনেই চটলেন চন্দনা