উত্তর ২৪ পরগনা: পানিহাটিতে কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় আরও ২ জনকে গ্রেফতার করল খড়দা থানার পুলিশ। মঙ্গলবার ভোর রাতে বারুইপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় ২ জনকে। ধৃতদের নাম সুজিত পণ্ডিত ও প্রসেনজিৎ পণ্ডিত। ধৃত শম্ভুনাথ পণ্ডিতকে জেরা করে তাদের নাম জানতে পারে পুলিশ। তারপর তাদের খোঁজে চলে রাতভর তল্লাশি। শম্ভুনাথ জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, খুনের সময়ে এই দুজনই ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিল। বারুইপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে দুজনকে। ধৃতদের বারাকপুর আদালতে পেশ করা হবে।
পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপম দত্তকে খুনের ঘটনায় সোমবার দিনভর উত্তপ্ত থাকে রাজ্য। আততায়ী অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় একেবারে নির্বিকার চিত্তেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে কাউন্সিলরের মাথার পিছনে গুলি করে বলে অভিযোগ। খুনের গোটা দৃশ্য ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি বাইকের পিছনে বসে ছিলেন কাউন্সিলর অনুপম। তাঁর ঠিক পিছনেই নীল রঙের শার্ট পরে এক ব্যক্তি ঘোরাফেরা করছিল। সামনের দোকানের দোকানিও তখন বাইরে দাঁড়িয়েই কথা বলছিলেন।
আচমকাই নীল রঙা শার্ট পরিহিত ব্যক্তি, (যে আদতে শম্ভুনাথ পণ্ডিত) হঠাৎ পকেট থেকে একটা বন্দুক বার করে নির্বিকারে কাউন্সিলরের মাথার পিছনে বন্দুক ঠেকিয়ে ট্রিগার চেপে দেয়। তারপরই চোখের নিমেশে পালিয়ে যায় সে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাইক থেকে মাটিতে পড়ে যান কাউন্সিলর। স্পট ডেথ কাউন্সিলর। ঘটনাস্থলে সে সময় সর্বসাকুল্যে ছিলেন চার জন। কাউন্সিলর যে ব্যক্তির বাইকে বসেছিলেন, তার উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলেন এক ব্যক্তি। আর স্থানীয় দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তি। সিসিটিভিতে অত্যন্ত তেমনটাই ধরা পড়েছে। তবে শম্ভুনাথ জানিয়েছে, ধৃত দুজনও সেসময় ঘটনাস্থলেই তার আশেপাশে ছিল।
ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। মূলত তাঁরাই শম্ভুনাথ পণ্ডিতকে স্থানীয় হোগলা বন থেকে উদ্ধার করেন। হোগলা বনে ঝোঁপের মধ্যে লুকিয়ে ছিল আততায়ী। স্থানীয়রা হোগলা বনে আগুন ধরিয়ে দেন। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে বন। অত্যন্ত নাটকীয়ভাবে ঝোপের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় শম্ভুনাথকে। এরপর স্থানীয়রাই একটি সিমকার্ড হীন মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এলাকায় ‘ভালো মানুষ’ হিসাবে পরিচিত কাউন্সিলর খুনে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই মোট ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় একটা বড় ষড়যন্ত্র কাজ করছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। মাথা কে? কার নির্দেশে সুপারি কিলার শম্ভুনাথ গুলি চালিয়েছিল, সেটাই জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: TMC Leader Shot Dead: মেমারি থেকে শ্যাওড়াফুলির রিটার্ন টিকিট কাটা ছিল আততায়ীর! তৃণমূল কাউন্সিলর ‘খুনে’ চাঞ্চল্যকর তথ্য…