
উত্তর ২৪ পরগনা: আবাসের ঘর মিলে যাবে, কিন্তু তার পরিবর্তে দিতে হবে ‘কাটমানি’। হাড়োয়ায় এই ‘মডেলেই’ প্রতিপত্তি তৈরি করেছেন তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। নাম শাহজাহান বিশ্বাস। তাঁর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। শাহজাহান হাড়োয়া বিধানসভার অন্তর্গত গোপালপুর ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের পুকুরিয়া গ্রামের ২৭২ নম্বর বুথের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্য হলেও তাঁর নাকি কীর্তির অভাব নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার পরিবর্তে ভুক্তভোগীদের থেকে কাটমানি নিয়েছেন তিনি। তুলেছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এদিন আবুর আলি মন্ডল নামে ওই গ্রামেরই এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘ওনার বিরুদ্ধে একটা নয়, হাজারটা অভিযোগ রয়েছে। একে তো সরকারি ঘরগুলো দেওয়ার জন্য় টাকা চাইত। যাঁরা টাকা দিত, তাঁরা পেয়ে যেত। কিন্তু যে ভুক্তভোগীরা টাকা দিতে পারতেন না, তাঁদের ঘরগুলো অন্য কাউকে ধরে বিক্রি করে দিত।’
শাহজাহানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে গোটা গ্রাম। পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বারংবার দ্বারস্থ হয়েছে তাঁরা। কিন্তু সুরাহা মেলেনি বলেই অভিযোগ তাঁদের। শেষমেশ কোনও উপায় না পেয়ে শাহজাহানের ‘দুর্নীতি’ রুখতে সম্প্রতি হাড়োয়া ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের দফতরে দ্বারস্থ হন অভিযোগকারীরা। লিখিত ভাবে শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তাঁরা।
তবে এই সকল অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের শাহজাহান। এদিন টিভি৯ বাংলার তরফ থেকে ফোন করা হয়েছিল তাঁকে। শাহজাহান জানিয়েছেন, ‘এর কোনও বাস্তবতা নেই। যাঁরাই এসব অভিযোগ করেছেন, সবটাই আসলে ভিত্তিহীন।’ অবশ্য, গোপালপুর পুকুরিয়া গ্রামের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্যের শাসকশিবিরের দিকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন বসিরহাট জেলা বিজেপির যুব সভাপতি পলাশ সরকার। এদিন তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের পাঠানো টাকা লুঠ করছে। যাঁরা যোগ্য তাঁদের আবাস যোজনা না দিয়ে অযোগ্যদের দিচ্ছে। আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজত্বে যোগ্যরা প্রথম থেকেই বঞ্চিত।’