কামারহাটি : কামারহাটিতে বড় ধাক্কা খেল সিপিএম। কামারহাটি পুরসভার একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলর আফজল খান এবার যোগ দিলেন তৃণমূলে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে পুরনির্বাচন হয়েছিল, তাতে ৩৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩২ টিতে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছিল সিপিএম। কিন্তু বুধবার সেই ওয়ার্ডের জয়ী সিপিএম কাউন্সিলর আফজল খান দল বদলে ফেললেন। কাস্তে হাতুড়ি ছেড়ে এখন তিনি জোড়াফুল শিবিরে। বুধবার কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের উপস্থিতিতে নিজের অনুগামী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন ওই কাউন্সিলর। সিপিএম নেতার এই দলবদল প্রসঙ্গে মদন মিত্র নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় বলেন, “মেরেছিস কলসির কানা, তা বলে কি প্রেম দেব না? আফজলকে নিয়ে আমরা প্রেমটা দিয়ে দিলাম।”
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই এসে বলে গিয়েছিলেন, আগে সময় দেওয়া হবে এবং তারপর দলে নেওয়া হবে। কিন্তু এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মদন মিত্রকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কি এই কথা বলেছিলেন যে আমার পার্টির মা, আমার ইষ্ট দেবতা, আমার প্রতীক… তৃণমূলের পতাকা… সেটায় দাঁড়িয়ে যদি কেউ প্রস্রাব করে, আমার পার্টির নেতৃত্বের মুখে থুতু দেয়… তাঁদের জামাকাপড় ছিঁড়ে, লাথি দেয়… তাঁদের জন্য দল চুপ করে বসে থাকবে? নাকি রাস্তায় প্রতিবাদী আন্দোলন করবে? এর একটাই উত্তর ছিল… খুব ভাল করে গুছিয়ে যদি একটা প্রতিবাদ করা যেত। আমি তো সেই প্রতিবাদের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু দল বলল না, ওটা রাস্তা নয়।”
সদ্য দল বদলানো কাউন্সিলর আফজল খানের বক্তব্য, “কীভাবে আরও উন্নয়ন করা যায়, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। বিগত ১১ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যুব আইকন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে যেভাবে উন্নয়নের সঙ্গে আমি তৃণমূলে যোগ দিলাম। মানুষের কাজ করার জন্যই তৃণমূলে এলাম।” পুরনো দলের উপর ক্ষোভ উগরে দিতেও ছাড়েননি। বলেন, “ভোটের দিন পাঁচটার পরও এলাকায় অশান্তি হয়েছে। সেদিন সিপিএমের কোনও বড় নেতা আমার হাল জিজ্ঞেস করতেও আসেননি।”
তবে এই দলবদলের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সিপিএম দলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এদিকে গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি শিবির। পদ্ম শিবিরের তরফে বিজেপি নেতা জয় সাহা বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নের তো তুলনাই হয় না। বোমা এখন অনলাইনে হোম ডেলিভারি পাওয়া যায়। অপরাধের রাজনীতিতে সারা ভারতে পশ্চিমবঙ্গ আলাদা নজির গড়ছে। চাপের মধ্যে হোক বা নিজের ইচ্ছাতেই হোক, তোলা তোলার জন্য এই তোলামূল পার্টিতে এখন অনেকেই যোগদান করছে। সেই যোগদানের চিত্রটাই দেখল কামারহাটি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। আগামী দিনের মানুষ এর ফল বুঝতে পারবেন।”