
কামারহাটি: কেউ উপস্থিত হচ্ছেন না, কেউ আবার বিধায়কের বক্তৃতার সময় বেরিয়ে যাচ্ছেন। কাউন্সিলরদের ‘স্পর্ধা’ দেখে আর মেজাজ ঠিক রাখতে পারলেন না কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। ভরা কর্মিসভায় ‘হরিদাস পাল’ বলে কাউন্সিলরদের আক্রমণ করলেন তিনি। বললেন, ‘বাঁচানোর জন্য কোনও বাবা এসে পাশে দাঁড়াবে না।’ সেই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিলেন, তৃণমূলের দয়ার কারা চাকরি পেয়েছে।
কামারহাটি নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের একটি কর্মিসভা চলছিল। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্মল ঘোষরা। উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার দলের নেতা-কর্মীরা। হল মোটামুটি ভরাই ছিল। কিন্তু মদন মিত্রের দাবি, সায়ন্তিকার বক্তব্যের সময় একে একে হল ছেড়ে বেরিয়ে যান একাধিক কাউন্সিলর। অনেকে আবার পরপর ৫টা মিটিং-এ হাজিরই হননি। শুক্রবার মঞ্চ থেকে সেই কাউন্সিলরদের কড়া বার্তা দিলেন তিনি।
দলের কাউন্সিলরদের উদ্দেশে মদন মিত্র বলেন, “কী ভাবছেন নিজেদের? হরিদাস পাল? এখনই যদি গা থেকে তৃণমূলের জামাটা খুলে নেওয়া হয়, আর কাউন্সিলর পদটা নামের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে পাড়ার কুকুরও পায়ে কামড় দিয়ে দেবে।” বিধায়ক আরও বলেন, “যদি ২৪ ঘন্টার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দেন যে কামারহাটিতে তৃণমূল বলে আর কিছু থাকবে না, তাহলে সবাই তৃণমূলের নেতাদের পায়ের তলায় গিয়ে বসে পড়বেন।”
কোনও লাগাম না রেখেই এদিন মদন মিত্র বলেন, “এখানে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে ৪০ শতাংশ কর্মী এখানে তৃণমূলের দেওয়া চাকরি করেন। যাঁরা সেটা পাননি, তাঁরা কী ভাববেন ভেবে দেখুন।” তাঁর কথায় হাততালির ঝড় ওঠে উপস্থিত বাকি কর্মীদের মধ্যে থেকে। তবে প্রশ্ন উঠছে, ‘তৃণমূলের দেওয়া চাকরি’র কথা বলে কি কার্যত নিয়োগ দুর্নীতির কথা মেনে নিলেন মদন?
কর্মিসভায় রীতিমতো হুঙ্কার দেওয়ার পর মদন মিত্র এটাও বলে দিলেন যে তাঁর নামে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জমা হতেই পারে। কিন্তু ওয়ার্ড অফিসে কত উপস্থিতি, সেটাও দেখতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।
বিজেপির দাবি, নিরাপত্তাহীনতায় এ সব কথা বলছেন তৃণমূল নেতা। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ব্রাত্য বসুও আগে মেনে নিয়েছিলেন। একই কথা মদন মিত্র বললেন। বোঝাই যাচ্ছে, তৃণমূল মানে চাকরি বিক্রি করা সরকার। এবার নিজেদের লোকেরাই বলতে শুরু করেছেন। তৃণমূল যে চাকরিটা দিয়েছে সেটা স্মরণ করিয়ে দিতে হচ্ছে।”