Matua Politics: ‘ঘরে ফেরার’ ডাক মমতাবালার, সাড়া দিতে ‘নারাজ’ বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর
Subrata Thakur: বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটির তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরেই দলের হোয়াটস্যাপ গ্রুপ ছাড়েন পাঁচ বিজেপি বিধায়ক। সেই তালিকায় রয়েছেন গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরও।
উত্তর ২৪ পরগনা: বিজেপির হোয়াটস্যাপ গ্রুপ ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুব্রত ঠাকুরদের (Subrata Thakur) দলে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর। আর এরপরেই সরাসরি মমতাবালাকেই নিশানা করলেন গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA)। তবে তিনি কেন দলীয় হোয়াটস্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
সুব্রত ঠাকুর এদিন বলেন, “মমতাবালা ঠাকুর কি রাজনীতি বোঝেন? যে দলে ফিরতে আহ্বান করছেন! আমার তো তা মনে হয় না।” কিন্তু, সদ্যই তিনি বিজেপির হোয়াটস্যাপ গ্রুপ থেকে লেফট হয়েছেন। তাই সুব্রতর বর্তমান অবস্থান নিয়ে বেশ ধন্দে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, তৃণমূলে আপাতত যোগ দিচ্ছেন না সুব্রত। তবে কেন তিনি গ্রুপ লেফট করেছেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। শোনা যাচ্ছে, অতি সম্প্রতি মতুয়াদের নিয়ে একটি বৈঠকও করতে পারেন তিনি।
ঠিক কী বলেছেন মমতাবালা?
রবিবার মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘‘বিজেপির পাশ থেকে মতুয়ারা সরে যাচ্ছে। এটা বুঝতে পেরেই অনেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। যাঁরা বেরিয়ে গিয়েছেন তাঁদের তৃণমূলে স্বাগত। কিন্তু এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আমি এ টুকু বলতে পারি, মতুয়াদের জন্য কেউ যদি কিছু করে থাকেন, তা হলে তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমার কাছে হাজার হাজার ফোন আসছে। সকলেই বলছেন, ভুল করে ফেলেছি, তৃণমূলে ফিরতে চাই। আমি বলেছি, সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী। সুব্রতরা যদি এই পথেই হাঁটতে চান, তা হলে স্বাগত।’’
মমতাবালার আরও সংযোজন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ওঁদের দলে ফেরান, তা হলে একসঙ্গে আরও ভাল কাজ করা যাবে।” সম্প্রতি, বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটির তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরেই দলের হোয়াটস্যাপ গ্রুপ ছাড়েন পাঁচ বিজেপি বিধায়ক। সেই তালিকায় রয়েছেন গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরও। সূত্রের খবর, যাঁরা গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন তাঁরা সকলেই ঘটনাচক্রে মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত।
বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটির তালিকায় একজনও মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত কেউ স্থান পাননি বলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই বিধায়করা, অন্তত এমনটাই কানাঘুষো শোনা গিয়েছে। অথচ, বিজেপির একটি বড় অংশের ভোটপ্রাপ্তি ঘটেছে এই মতুয়া গড়েই। আরও শোনা যাচ্ছে, দলের অন্দরের এই ‘অভিযোগ’ নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে পারেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। এই পরিস্থিতিতেই শান্তনু ও সুব্রতকে দলে ফেরার আহ্বান জানান মমতাবালা।
উল্লেখ্য, মতুয়াদের মধ্যে অত্যন্ত প্রভাবশালী গাইঘাটার ঠাকুরবাড়ি রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। সুব্রত ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুর বিজেপিতে থাকলেও সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা তৃণমূলের সঙ্গে। এরফলে মতুয়া ভোটেও তার প্রভাব পড়তে পারে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। অন্যদিকে, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই সুব্রতকে সেভাবে দলের বৈঠকে দেখা যায়নি। দলের কোনও কর্মসূচিতেও সেভাবে দেখা যায়নি ‘মুকুল-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত গাইঘাটার এই বিধায়ককে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে তাই জল কোন দিকে গড়ায় সেদিকে তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।