
উত্তর ২৪ পরগনা: ত্রিকোণ প্রেমের জের! যুবককে সারা রাত আম বাগানে অমানবিক মারধরের পর গায়ে মুত্রত্যাগের অভিযোগ। অভিযুক্তরা সেই ছবি নিজেরাই তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে সেই পোস্ট। ঘটনায় ক্ষুব্ধ নৈহাটির বিধায়ক। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তরা গ্রেফতারও হয়। কিন্তু অভিযোগ, জেঠিয়া থানার পুলিশ লঘু মামলা দেওয়ায় অভিযুক্তরা দ্রুত জামিনও পেয়ে যান। পুলিশের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন বিধায়ক সনত দে।
ঘটনাটি জেঠিয়ার জোনপুর এলাকায়। ত্রিকোণ প্রেম নিয়েই সম্পর্কের জটিলতা। রবীন্দ্রনগর এলাকার এক যুবককে তুলে নিয়ে আমবাগানে আটকে মারধরের অভিযোগ। রাতভর মারধরের পর তাঁর গায়ে মুত্রত্যাগও করেন অভিযুক্তরা। ছবি দেখে নিন্দা করছেন শাসক দলের বিধায়ক থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যও।
অভিযোগের ভিত্তিতে জেঠিয়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত শুভ্রনীল এবং জিৎ নামে ওই দু’জনকে গ্রেফতারও করে। কিন্তু রাতারাতি জামিনও পেয়ে যান তাঁরা। তাতে আরও ক্ষুব্ধ বিধায়ক। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যও।
নৈহাটির বিধায়ক সনত দে বলেন, “পুলিশ গ্রেফতার করেছে, কিন্তু এমনই সেকশনে পাঠিয়েছে, যে বেলও হয়ে গিয়েছে তাঁদের। আমি গতকাল থেকেই শুনেছি, একটা ত্রিকোণ প্রেমে হয়েছে। বারে গিয়ে আগে মদ খেয়েছে, তারপর আটকে রেখে মারধর করা, প্রস্রাব করে দেওয়া, কিছু বলার ভাষা নেই। আমি ওসি-র সঙ্গে কথা বলেছি। সেকশন অ্যাড করে চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছি। এই অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই। ভিডিয়ো আমি দেখেছি, মারাত্মক দৃশ্য।”
কিছুদিন আগে খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দলের গোষ্ঠীকোন্দলে আহত এক কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। পুলিশ দুষ্কৃতীদের দালালি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এবার পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শাসকদলের আরও এক বিধায়ক।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আক্রান্তের বয়ান অনুযায়ী, এলাকারই এক যুবতীর সঙ্গে তাঁর প্রেম ছিল। কিন্তু সে সম্পর্কে অবনতি হয়। পরবর্তীতে তিনি সম্পর্ক থেকে সরে আসেন। কিন্তু ওই যুবতীরই প্রাক্তন প্রেমিক তাঁর ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তারই আক্রোশে শুভ্রনীল এবং জিৎ তাঁকে বারে বারে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এরপর তাঁকে ডেকে নিয়ে রবীন্দ্রপল্লির কাছে আম বাগানে নিয়ে সারা রাত বেধড়ক মারেন বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় কোনও ক্রমে পালিয়ে বাঁচেন তিনি।
বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি ফাল্গুনী পাত্রের বক্তব্য, “পুলিশের নিস্ক্রিয়তার জন্যই দুষ্কৃতীদের এই বাড়-বাড়ন্ত। পুলিশ লঘু মামলা দায়ের করে আদালতে জামিন পাইয়ে ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছে।”