উত্তর ২৪ পরগনা: নৈহাটিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু। শনিবার ভরসন্ধ্যায় নৈহাটিতে গুলিবিদ্ধ হয় তৃণমূল কর্মী। রবিবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় জাকির হোসেন নামে ওই তৃণমূল কর্মীর। জানা যাচ্ছে, শিবদাসপুর এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে বসে ছিলেন জাকির। সেখানে ১০-১২ জন তাঁর ওপর হামলা চালায়। অভিযোগ, তাঁকে লক্ষ্য করে প্রথমে বোমা ছোড়া হয়। বোমা লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় এরপর তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। পরপর তিন রাউন্ড গুলি করা হয় বলে অভিযোগ। জাকিরের বুকে, পেটে, হাতে গুলি লাগে। দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় আহত হন আরও এক তৃণমূল কর্মী। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার কিংবা আটক করতে পারেনি পুলিশ। অকুস্থলে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে থমথমে এলাকা।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের হাতে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
এলাকায় হেরোইন এবং অস্ত্র সরবরাহে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জাকির। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এলাকায় যে কোনও অসামাজিক কাজে বাধা দিতেন জাকির। তাঁর মধ্যে একটা প্রতিবাদী সত্ত্বা ছিল। এর ফলে জাকির অনেকেরই রোষের মুখে পড়েন।
এই ঘটনার নেপথ্যে আসিফুল ওরফে বাচ্চা নামে এক জনের নাম উঠে আসছে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত আসিফুল। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না। হিরোইন এবং গাজার ব্যবসায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জাকির হুসেন। তাই তাঁকে খুন করে পথ ফাঁকা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
কিন্তু এই আসিফুল ওরফে বাচ্চার কেন এত দৌরাত্ম্য? তার মাথায় কি অন্য কারোর হাত রয়েছে? ভয়ে এই মুহূর্তে মুখ খুলতে চাইছেন না অনেকেই। এক স্থানীয় যুবক বলেন, “বাচ্চাই মেরেছে। আসলে কিছু দিন আগে জাকির ভাইরা মিলে বাচ্চাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ও হেরোইনের ব্যবসা করত। ১৫ দিন আগে ছাড়া পায়। তারপরই এই ঘটনা ঘটল।” জাকির হোসেন এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গ্রাম। গ্রামবাসীরা ভিড় করছেন তাঁর বাড়িতে।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “তিন দিনের মধ্যে কাঁকিনাড়া, নৈহাটি, নরেন্দ্রপুর সন্ত্রাসের শিরোনামে পৌঁছেছে। দুর্নীতির অবাধ স্বর্গরাজ্য। প্রকাশ্যে মোটর সাইকেল করে এসে গুলি করেছে। শোনা যাচ্ছে কোনও নাবালক গুলি চালিয়েছে। রাজ্যের অবস্থায় কোথায় দাঁড়িয়ে, ভাবা যায়।”