উত্তর ২৪ পরগনা: পাশের বাড়িতেই চলে মদ-গাঁজার ব্যবসা। এমনকি বিকোতে হিরোইনও। দিবারাত্র সেখানে জুয়ারি-নেশাখোরদের ভিড়। অকথ্য গালিগালাজ, নোংরা ইয়ার্কিঠাট্টা চলত সর্বক্ষণ। শুধু প্রতিবেশী নয়, বরং আত্মীয়ই তাঁরা। আত্মীয়ের বাড়িতে এসব হওয়াতে প্রতিবাদ করেছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের গৃহবধূ। প্রতিবাদ ভরা রাস্তায় নাইটি ছিঁড়ে ফেলা হয় তাঁর। শুধু তাই নয়, বরের সামনেই লোহার রড দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। মাথায় সাতটি সেলাই পড়েছে তাঁর। বনগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। মদ খাওয়ার প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত দম্পতি। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য বনগাঁর জোকা গ্রামে। ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
নবকুমার সিংহ নামে আক্রান্ত যুবকের পাশের বাড়িতেই সুভাষ মণ্ডল, গণেশ তোরফদার মদ-গাঁজার ব্যবসা চালান বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা দুজনেই সম্পর্কে আত্মীয়। গা লাগোয়া ওই বাড়িটির সদস্য় তাঁদের আত্মীয়ও। মদ গাঁজার ঠেকে প্রচুর বাইরের লোক ভিড় জমাত। সন্ধ্যার পর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে চলাই দায় হয়ে ওঠেছিল। এমনকি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে নোংরা গালিগালাজও দেওয়া হয়। তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন নবকুমার ও তাঁর স্ত্রী।
রবিবার সন্ধ্যায় তাঁরা ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, অভিযুক্তদেরই একজন দাবি করেন, তাঁরা নাকি পুলিশকে টাকা দিয়ে সব করছেন…এবং ‘হিম্মত থাকলে কিছু করে দেখাক’ বলেও হুমকি দেন। অভিযোগ, এরপরই নবকুমারের ওপর চড়াও হন তাঁরা। লোহার রড দিয়ে তাঁর ওপর হামলা চলে। ঠেকাতে এসে আক্রান্ত হন তাঁর স্ত্রী।
নবকুমারের স্ত্রীর পরনের নাইটি টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। লোহার রড দিয়ে তাঁর মাথায় মারা হয়। রক্তে ভেসে যায় জামাকাপড়। স্থানীয়রা মহিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছেন ৷ গৃহবধূর স্বামী নব কুমার সিংহ ৬ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত শুরু করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ।
অভিযোগকারী বলেন, “ওরা বলছে পুলিশকে টাকা দিয়ে সব করছে। কোথায় যাই বলুন তো। প্রতিবাদ করাতে তো এই হাল। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।” তবে এ বিষয়ে বনগাঁ থানায় কর্মরত পুলিশ কর্তাদের প্রশ্ন করা হলে, তা এই সংক্রান্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাইনি। বরং বলেছেন, অভিযোগ হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভাদুর খুনের পর পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কাদের কত বার ফোনে কথা? এবার বেরিয়ে আসবে উত্তর