উত্তর ২৪ পরগনা: টেলিভিশনে মাধ্যমিকের (Madhyamik) ফল প্রকাশের খবর পেয়েই মোবাইল ফোন হাতে কাউকে ফোন করেছিল বছর ষোলর রেশমা খাতুন। তারপর কখন এক লহমায় মুখ থেকে হাসিটা মুছে গিয়েছে তা খেয়াল করেননি বাড়ির কেউ। দুপুর বেলা অনেক ডাকাডাকিও করেও যখন দরজা খুলল না রেশমা, তখন সন্দেহ হয় বাড়ির সকলের। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই রেশমার ঝুলন্ত দেহ আবিষ্কার করেন তার বাবা।
মৃতার পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, গোপালপুর গার্লস হাই স্কুলের অত্য়ন্ত মেধাবী ছাত্রী বলেই পরিচিত ছিল রেশমা খাতুন। মাধ্যমিক পরীক্ষার (Madhyamik) জন্য খুব ভাল করে প্রথম থেকেই মন দিয়ে প্রস্তুতিও নিচ্ছিল সে। মঙ্গলবার পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরেই কাউকে ফোন করে রেশমা। তারপর নিজের ঘরে ঢুকে যায়। তারপর আর ঘর থেকে বেরোয়নি রেশমা। দুপুরে তার মা খেতে ডাকলেও সাড়া মেলেনি। তখনই বাড়ির সকলে মিলে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতেই গলায় দড়ি দেওয়া রেশমার ঝুলন্ত মৃতদেহটি আবিষ্কার করেন। খবর দেওয়া হয় হাড়োয়া থানায়। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান আত্মহত্যাই করেছে রেশমা। তবে, এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে রেশমার পরিবার।
করোনাকালে মাধ্যমিক (Madhyamik) ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল বলে ঘোষণা করে রাজ্য় সরকার। সেই ঘোষণা শুনে আত্মহত্যা করে একাধিক পড়ুয়া। পরবর্তীতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন নির্ধারণে যথাক্রমে নবম-দশম শ্রেণির হোম এসেসমেন্ট ও অন্যান্য মূল্যায়নে প্রাপ্ত ফলাফল এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে একই পদ্ধতিতে দুইবছরের প্রাপ্ত ফলের গড় ধরে পরীক্ষার মূল্যায়ন নির্ধারিত হয়। মঙ্গলবার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর জানা যায় এ বছর মাধ্যমিকে পাশের হার ১০০ শতাংশ। মাধ্যমিকের ফলাফল নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়ুয়ারাও। মাধ্য়মিকের পরেও একাধিক মেধাপরীক্ষা গুলির ক্ষেত্রে বা ভর্তি প্রক্রিয়ায় কীভাবে মূল্যায়ন হবে তা নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষক-অভিভাবক-পড়ুয়ারা।
এই পরিস্থিতিতে রেশমার মতো পরীক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’ প্রশ্ন তুলছে, তবে কি মূল্যায়নের জেরেই এমন চরম পদক্ষেপ নিল ওই পরীক্ষার্থী? উচ্চাকাঙ্ক্ষাই কি এর কারণ? এর পেছনে অন্য প্রেমঘটিত কারণ আছে কি না তাও দেখা হচ্ছে। ফল প্রকাশের পর রেশমা কাকে ফোন করেছিল এবং কেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানিয়েছে হাড়োয়া থানার পুলিশ। আরও পড়ুন: ‘তোর লজ্জা করে না?’ ৩ বছরের শিশুকন্যাকে ‘ধর্ষণ’,গণপ্রহারের শিকার অভিযুক্ত!