Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

বিকল্প কী! পেশায় টান, নেই ‘কাস্টমার’, টিকা পেয়েও ‘অখুশি’ যৌনকর্মীরা

লকডাউনে শুধু, মাটিয়াতেই নয়, কলকাতার সোনাগাছি থেকে হাড়কাটা গলি কিংবা জলপাইগুড়ির বাজার এলাকার যৌনকর্মীরা, জীবিকায় টান সকলের। অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই লড়ছেন তাঁরা।

বিকল্প কী! পেশায় টান, নেই 'কাস্টমার', টিকা পেয়েও 'অখুশি' যৌনকর্মীরা
চলছে টিকাদান, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 10:06 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: রাজ্য জুড়ে জারি কার্যত লকডাউন। সংক্রমণের ভয়ে অন্ধকার স্যাঁতস্যাঁতে ঘরগুলোতে রাতে আসেনি ‘লক্ষ্মী’, বলা ভাল ‘কাস্টমার’। স্তব্ধ জীবিকা। সোনাগাছির পর রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম যৌনপল্লি বসিরহাটের মাটিয়া এখন শান্ত। প্রায় ১৫০০ যৌনকর্মীর ভিটে-মাটি এখানেই। কিন্তু দেখা নেই ‘খদ্দেরের’। জীবন-জীবিকার গভীর সংকটের মধ্যেই প্রায় ২০০ জন যৌনকর্মীকে শুক্রবার করোনা টিকা দেওয় হল। বসিরহাটের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে কোভিশিল্ড দেওয়া হল যৌনকর্মীদের। তবু হাসি ফোটেনি ওঁদের মুখে।

টিকা নিতে আসা এক যৌনকর্মী বলেন, “এর আগেও লকডাউন হয়েছিল। তখন সব বন্ধ ছিল। ধীরে ধীরে যা একটু শুরু হল ফের একই অবস্থা। গাড়ি চলছে না। তার উপর করোনার ভয়। কাস্টমার নেই। রোজগার পুরো বন্ধ। থানা থেকে কিছু সাহায্য করেছিল। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু তাতে পেট চলে কিছুদিন। বাকি দিনগুলোর কী হবে। আমাদের হাতে অন্য কাজের রাস্তাও বন্ধ। সরকারের কাছে অনুরোধ, অন্তত, বাস-ট্রাম চলার অনুমতি দিন।” অন্য আরেক যৌনকর্মী বলেন, ” আমাদের খাওয়াদাওয়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আধবেলা খেয়ে থাকছি। জমানো যা টাকা পয়সা, তা শেষের দিকে। বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবা রয়েছে। কারোর স্বামী-পরিবার রয়েছে। নিজেরাই খেতে পারছি না। ঘর কী সামলাব! অন্য কাজের চিন্তা করতে হচ্ছে।”

লকডাউনে শুধু, মাটিয়াতেই নয়, কলকাতার সোনাগাছি থেকে হাড়কাটা গলি কিংবা জলপাইগুড়ির বাজার এলাকার যৌনকর্মীরা, জীবিকায় টান সকলের। অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই লড়ছেন তাঁরা। যৌনকর্মীদের সংস্থা দুর্বারের তরফে খবর, করোনাকালে, এই পেশায় হুহু করে বেড়েছিল মেয়ের সংখ্যা। সহজে আয়ের রাস্তা হিসেবে অনেকেই বেছে নেয় এই কাজ। কিন্তু, লাভ হয়নি। সোনাগাছির এক যৌনকর্মীর কথায়, “মেয়ে বেশি হয়ে গিয়েছে, কাস্টমার কম।”ফলে, অন্য পেশাতেই পা বাড়াচ্ছেন অনেকে। আবার, সামাজিক কারণেই সমাজের মূল স্রোতে মিশতে গিয়েও বাধা পেয়ে ফিরে এসেছেন চার ফুট বাই ছয় ফুটের ঘরে, অন্ধকার স্যাঁতস্যাঁতে গলিতে।

যৌনকর্মীদের সংস্থা দুর্বারের সদস্য কাজল বোস বলেন, “করোনাকালে অন্য কোনও পেশা চালু নেই। এই পরিস্থিতে, দুর্বারের তরফে আমরা চেষ্টা করছি সর্বত্র পৌঁছে যাওয়ার। সবার আগে মেয়েদের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচানো। সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করছি, কীভাবে অর্থসাহায্যের ব্যবস্থা করা যায়। আমরা চেষ্টায় আছি। এর বেশি তো কোনও উপায় নেই।” সোনালী দিন আবার ফিরছে স্বপ্ন দেখছে পঁয়ষট্টি হাজার চোখ।

আরও পড়ুন: বাড়ি ফিরে কাজ জোটেনি, অবসাদে আত্মঘাতী কেরল ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক