Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

বাড়ি ফিরে কাজ জোটেনি, অবসাদে আত্মঘাতী কেরল ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক

"অন্যান্য রাজ্য এরকম অনেক পরিযায়ী শ্রমিক কর্মহীন হয়ে মারা গিয়েছেন শুনেছি। আমাদের গ্রামেও ঘটবে তা ভাবিনি কখনও।''

বাড়ি ফিরে কাজ জোটেনি, অবসাদে আত্মঘাতী কেরল ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 5:48 PM

জলপাইগুড়ি: অতিমারি করোনায় (Corona) কাজ খুইয়ে কেরল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু বাড়ি এসে কোনও কাজ জোটেনি। সংসার চালাতে হিমশিম খেয়ে অবসাদে আত্মঘাতী হলেন পরিযায়ী শ্রমিক যুবক। বাড়ির পাশ থেকে উদ্ধার হল ঝুলন্ত দেহ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ধূপগুড়ি ব্লকের বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেমটিয়া এলাকায়।

করোনার অতি মারিতে লকডাউন চলছে বিভিন্ন রাজ্যে। তাই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ভিন রাজ্যে থাকা বহু শ্রমিক। তেমনই কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন শ্রমিক শঙ্কর রায়। কিছুদিন আগে কেরল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন ওই যুবক। তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে পরিবারের দাবি।

পরিবার সূত্রে খবর, কাজ হারিয়ে বাড়ি ফেরার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। বাড়িতে এসে বেশিক্ষণ থাকতেন না। প্রতিদিন রাত করে বাড়ি ফিরতেন ওই যুবক। তা নিয়ে চিন্তিত ছিল পরিবার। প্রতিদিন দেরি করে আসায় বাবা বকাবকি করেন বলে খবর।

তার পরেই ভোর রাতে বাড়ির পাশে একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় ওই যুবককে। মৃতের নাম শঙ্কর রায় বয়স (২৬)। তিনি ধূপগুড়ি ব্লকের বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেমটিয়া এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় ধূপগুড়ি থানার পুলিশকে। ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশকর্মীরা। এরপর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকা জুড়ে।

মৃতের দাদা বিশ্বনাথ রায় বলেন, “ভাই কেরলে কাজ করতে গিয়েছিল করোনার জন্য। সেখানে লকডাউনের পর কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। তাই কর্মহীন হয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয় তাঁকে। সঙ্গে রোজগারের তেমন জমানো টাকাকড়িও ছিল না। তাই মনভার ছিল। কেরল থেকে আসার পর থেকেই দেরি করে রাতে বাড়িতে ফিরত। তাই নিয়ে বাবা একটু বকাঝকা করেন। তার পর গতকাল রাতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। আমাদের সন্দেহ, কর্মহীন হয়ে সঠিকভাবে উপার্জন করতে পারেনি, সেই মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।”

আরও পড়ুন: রেলপথে ধস! চোখের সামনে মাটির নীচে চাপা পড়ে একের পর এক শরীর… 

প্রতিবেশী আলতাব হোসেনের কথায়, “লকডাউনে কাজ হারিয়ে কেরল থেকে কিছুদিন আগেই ফিরেছিল শঙ্কর। তারপর থেকে মানসিক অবসাদে ভুগছিল ছেলেটা। মুখ ভার করে বাড়ি ফিরেছিল। প্রতিদিন বাড়ি ফিরত রাত করে। কর্মহীন হয়ে পড়ায় চিন্তাতেই সম্ভবত আত্মঘাতী হয়েছে ও। অন্যান্য রাজ্য এরকম অনেক পরিযায়ী শ্রমিক কর্মহীন হয়ে মারা গিয়েছেন শুনেছি। আমাদের গ্রামেও ঘটবে তা ভাবিনি কখনও।”