Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

পর-পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক! স্বামীকে গাছে বেঁধে চুল কাটা হল স্ত্রী’র

ফের মধ্যযুগীয় বর্বরতার নজির বাংলায়। গ্রামের মহিলারাই করলেন এই কাজ। ঘটনায় গ্রেফতার সাত।

পর-পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক! স্বামীকে গাছে বেঁধে চুল কাটা হল স্ত্রী'র
ভাইরাল সেই ভিডিয়ো
Follow Us:
| Updated on: Jun 17, 2021 | 5:36 PM

জলপাইগুড়ি: আলিপুরদুয়ারের পর এ বার ময়নাগুড়ি। মধ্যযুগীয় বর্বতার শিকার আরও এক মহিলা। পরকীয়ার অভিযোগ সামনে আসতেই স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মহিলার চুল কেটে দেওয়া হল শাস্তি। ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ময়নাগুড়িতে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পর পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ এনে এই আচরণ করা হয়েছে ওই মহিলার সঙ্গে। পৈশাচিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেধগুড়ি এলাকায়। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ওই মহিলার ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে আর সেটা করছে বেশ কয়েক জন মহিলাই। ভিডি্ য়ো ছড়িয়ে পড়তে ঘটনাস্থলে যাণ ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই এলাকার বাসিন্দা এক গৃহবধুর সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ সামনে আসার পর গ্রামের রীতি মেনে বসে সালিশিসভা। সালিশিসভায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ শুনেও বিষয়টা মেনে নিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। এরপর স্ত্রী’কে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁর স্বামী। সেই সময় এলাকার কিছু মহিলা তাঁদের ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। মহিলার স্বামীকেও গাছে বেঁধে রাখা হয়। এরপর উত্তেজিত মহিলাদের কয়েকজন ওই মহিলার গায়ে ও মাথায় জল ঢেলে দিয়ে মাথার চুল কাটতে উদ্যত হয়। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, মহিলার স্বামী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে বেঁধে রেখেই তাঁর স্ত্রী’র চুল কেটে নেন ওই মহিলারা।

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, ময়নাগুড়ি থানায় এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পরপর রাজ্যে দুটি একই ধরনের ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই সমাজের অন্ধকার দিক প্রকাশ্যে এনেছে। এই প্রসঙ্গে মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিৎ শূর বলেন, ‘সমাজের নগ্ন রূপ এই সব ঘটনার মধ্যে দিয়ে উঠে আসে। এই ধরনের ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় রাজনৈতিক মদত থাকে। বিশেষত শাসক দলের ভুমিকা থাকে এর পিছনে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আদিবাসীদের মধ্যে অনেক জায়গায় সামাজিক কু প্রথা রয়ে গিয়েছে, শিক্ষার আলো পৌঁছয়নি। তাদের অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে প্ররোচনা দেয় রাজনৈতিক মদতপুষ্ট কিছু মোড়ল।’ এ ক্ষেত্রে সরকারি সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর দাবি, পুলিশ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় থাকে। ফলে পরবর্তীকালে এদের সাজা হয় না।

আরও পড়ুন: শুক্রবার মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতি জানাবেন মমতা, ফলাফল কবে?

সমাজকর্মী ভারতী মুৎসুদ্দী এই প্রসঙ্গে পুরুষশাসিত সমাজকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘যতই বলি মেয়েদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ক্ষমতায়ন হয়েছে। আসলে মেয়েরা কো অন্ধকারে রয়েছে, সেটাই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।’ তাঁর মতে, এ ভাবেই কুসংস্কারের বলি হতে হয় মেয়েদের। অসহায়তা ফুটে আসে। পরকীয়া অভিযোগে শুধু মেয়েটিকেই দায়ী করা হয়েছে, পুরুষটি শাস্তি পাচ্ছে না। সে কথাও মনে করিয়ে দেন ভারতী দেবী।