সন্দেশখালি: একই ঘর, একই খাট, একই চেয়ার। অন্তত সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের স্ত্রী তাই জানালেন টিভি ৯ বাংলাকে। বললেন, “হ্যাঁ ভিডিয়োতে তো তাই দেখাচ্ছে এই চেয়ারে বসে…” তবে পরক্ষণেই অস্বীকার করছেন স্টিং অপারেশনের দরুণ সন্দেশখালির যে ভিডিয়ো গতকাল ভাইরাল হয়েছে তা তার স্বামীর নয়। হাই-টেকনোলজি ব্যবহার করে এই সব চক্রান্ত করা হয়েছে। আর তাঁর ছেলে আবার জানালেন এখন তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ দিন টিভি ৯ বাংলার প্রতিনিধিকে গঙ্গাধর কয়ালের স্ত্রী বিমলা কয়াল বলেন, “এটা তো আমাদেরই ঘর। ছবি দেখছি এই চেয়ারেই বসে আছে।” এরপরই গঙ্গাধরবাবুর স্ত্রী জানান, “তৃণমূল চক্রান্ত করেছে। প্ল্যান করে ফাঁসানোর জন্য এই কাণ্ড করেছে।” আবার অন্যদিকে,গঙ্গাধরের ছেলের বক্তব্য, “আমাদের নিরাপত্তার সমস্যা হচ্ছে। বাবার ছবি উপরে মাস্টার এডিট করা হয়েছিল। কথাগুলো সাজিয়ে বসানো হয়েছে। আমি চাই সত্য সামনে আসুক। বাবা গিয়েছে সিবিআই দফতরে অভিযোগ করতে।”
প্রসঙ্গত, গতকাল তৃণমূল কংগ্রেস নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে। যেখানে এই গঙ্গাধর কয়ালকে বলতে শোনা যায় সন্দেশখালিতে মহিলাদের ধর্ষণ করা হয়নি। সবটাই সাজানো ঘটনা। এরপরই তোলপাড় হয়ে যায় বঙ্গ-রাজনীতি। ভোটের প্রচারে গিয়ে একদিকে যেমন মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ উগরে বলেন, “সন্দেশখালি নিয়ে ভাল নাটক তৈরি করেছিলেন। আসল তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। আমি অনেকদিন ধরেই আপনাদের বলছিলাম এটা পরিকল্পনা। বিজেপির তৈরি করা নাটক।” ঠিক তেমনই সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনের আগে বাংলাকে ছোট করার ঘৃণ্য চক্রান্ত, বাংলার মাটিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা বিজেপি আগেও করেছে। তবে আজকের এই ফুটেজ নির্লজ্জতার সব নজির ভেঙে দিয়েছে। যে ভদ্রলোককে ফুটেজে দেখছেন তিনি সন্দেশখালি-২ মণ্ডল সভাপতি। সাধারণ কেউ নন। ইনি দলের মণ্ডলের সভাপতি। ব্লককে বিজেপি বলে মণ্ডল। সেই মণ্ডলের প্রধান পতাকাবাহক গঙ্গাধর কয়ালকে আপনারা ভিডিয়োতে দেখছেন। ১ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি শান্তি দলুইও রয়েছেন ভিডিয়োতে।”
তবে নিজের উপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে গঙ্গাধর গতকালই প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছিলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে সেটি পুরোপুরি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র। হাই টেকনোলজির মাধ্যমে আমার গলাকে বিকৃত করা হয়েছে। আমাকে, আমার দলকে,সন্দেশখালির আন্দোলনকারী মায়েদের কালিমালিপ্ত করতে এটা বিরোধীদের চক্রান্ত। আমি সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। আইপ্যাক ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করব।” অপরদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন,”তদন্ত হোক। আমার মনে হয় না এমন কিছু হয়েছে। তৃণমূল প্রলোভিত করে এইসব করেছে কি না দেখছি। দল তদন্ত করবে না। পুলিশ তদন্ত করুক। সব বাইরে চলে আসবে। আমার মনে হয় সন্দেশখালি থেকে চোখ ঘোরাতেই কাউন্টার স্ট্রাটেজি তৃণমূল নিয়েছে।”