
বনগাঁ: এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি চলছেই। তার সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন চমকপ্রদ সব ঘটনা সামনে আসছে। এসআইআর-র সৌজন্যে ২৬ বছর পর কোনও দম্পতি তাঁদের নিরুদ্দেশ সন্তানের খোঁজ পেয়েছেন। ৬ বছর ধরে নিখোঁজ স্বামীকে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সহ খুঁজে পেয়েছেন কেউ। এবার আরও একটি চমকপ্রদ ঘটনা সামনে এল। এসআইআরের সৌজন্যে তিন সন্তানের বাবা জানতে পারলেন, তাঁর আরও দুই ‘পুত্র’ রয়েছে। আর এই দুই ‘পুত্রের’ কথা জানতে পেরে উদ্বেগে রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। দুই ‘পুত্রের’ নাম কাটাতে বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
তিন থেকে কীভাবে পাঁচ সন্তানের ‘বাবা’ হলেন রবীন্দ্রনাথ?
বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভার ১৯১ নম্বর পার্টের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। তাঁর তিন সন্তান। স্ত্রী ও ৩ পুত্রকে নিয়ে তাঁর ৫ জনের পরিবার। পুত্রদের নাম নয়ন বিশ্বাস, অয়ন বিশ্বাস এবং সায়ন বিশ্বাস। এসআইআর ফর্ম আসার কথা ছিল পাঁচজনের। কিন্তু, বিএলও তাঁর বাড়িতে এসে ফর্ম দিতেই চমকে ওঠেন রবীন্দ্রনাথ। বিএলও সাত জনের ফর্ম দেন তাঁকে। ফর্ম দেখে রবীন্দ্রনাথ জানতে পারেন, তার নাকি পাঁচ সন্তান। রাজু বিশ্বাস ও বিশু বিশ্বাস নামে দু’জন তাঁকে বাবা দেখিয়ে ভোটার কার্ড করিয়েছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে গাইঘাটার বিডিও-র আছে অভিযোগ দায়ের করে রাজু ও বিশুর নাম বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর দাবি, রাজু ও বিশু নামে এই দু’জনকে চেনেন না তিনি। তাঁদের এলাকায় এই দু’জনের বাড়িও নয়। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “বিডিও আমাকে এসআইআরের সাতটি ফর্ম দেন। আমি দেখি, রাজু ও বিশু নামে দু’জন আমাকে বাবা দেখিয়ে ভোটার কার্ড করিয়েছেন। আমি অবাক হয়ে যাই। আমাদের পাঁচজনের ফর্ম রেখে বাকি দুটি ফর্ম বিএলও-কে ফিরিয়ে দিই।”
বিষয়টি সামনে আসতেই বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সব্যসাচী ভট্ট। তিনি বলেন, “এটা কীভাবে হল, তা নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে। ওই এলাকার বিধায়ক বিজেপির এবং পঞ্চায়েত সদস্যও বিজেপির। তাঁরা বলতে পারবেন কীভাবে এটা হল।”
পাল্টা বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেন, “বাংলায় দীর্ঘদিন তৃণমূল ক্ষমতায় রয়েছে। তৃণমূলের দালালরা বিভিন্ন অফিসের সামনে থাকে। তারা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো বাবা বানিয়ে এই ভোটার কার্ডগুলি করেছিল। এবার এসআইআর হওয়ার ফলে তা ধরা পড়ছে।” বিষয়টি খতিয়ে দেখার অশ্বাস দিয়েছেন গাইঘাটার বিডিও নীলাদ্রি সরকার।