খড়দহ: ‘বিজেপি-র গদ্দারদের ঢুকতে দেব না। যাঁরা ঢুকছেন তাদের প্রায়শ্চিত্ত করাচ্ছি।’ খড়দহে (Khardah) উপনির্বাচন উপলক্ষে সভা করতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
শনিবারের বেলায় অভিষেক সভা থেকে বলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে জয়ী করবেন মানুষ। আর এ নিয়ে বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের আগে প্রয়াত তৃণমূল নেতা কাজল সিনহাকে স্মরণ করতে গিয়ে পরোক্ষে নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করলেন অভিষেক।
তাঁর অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে আট দফা ভোট করেছে কমিশন। বহিরাগত ক্যাম্পেনারদের জন্য রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার পর অভিষেকের মন্তব্য, “মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে নিজের জয়টাই দেখতে পেলেন না কাজল সিনহা। কোভিডে মারা গেলেন। গোসাবা বিধায়ক জয়ন্ত নস্করও করোনায় মারা গেলেন।” বলেন, “মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করতে গিয়ে, মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে প্রয়াত হলেন কাজল সিনহা, জয়ন্ত নস্কর। বাংলায় এক দফায় নির্বাচনে হলে এই দুর্গতি হত না। তা হলে জয়ন্ত নস্কর, কাজল সিনহা, অজয় দে কে হারাতে হত না।” শোভনদেব প্রসঙ্গকে তাঁর মন্তব্য, ২৯৪ আসনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ লোককে পাঠানো হয়েছে খড়দহে। নিপাট ভদ্রলোক। অতুলনীয় অপ্রতিরোধ্য জুটি সৌগত এবং শোভনদেব। তার পর অভিষেকের সংযুক্তি, খড়দহের ট্রেন্ড বিধায়ক নয় মন্ত্রীকে নির্বাচন করা। পাশাপাশি খড়দহ কেন্দ্র থেকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জয়লাভ করবে বলে দাবি অভিষেকের।
আবার দিনহাটা, শান্তিপুরে উপনির্বাচনের জন্য বিজেপিকে নিশানা করেন অভিষেক। বলেন, “উপনির্বাচনের প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু ২ জন সাংসদ (বিজেপি) ভোটে দাঁড়ালেন। আবার মানুষের রায় প্রত্যাখ্যান করে মন্ত্রী হবে, সাংসদ থাকবে বলে ইস্তফা দিলেন! একদিকে দেখুন মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে দু’জন প্রয়াত হলেন। এটাই তৃণমূল আর বিজেপির পার্থক্য।”
এদিকে গোয়া সফরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য়দিকে ত্রিপুরায় সংগঠন মজবুত করেছে তৃণমূল। এই প্রেক্ষিতে অভিষেক জানিয়ে দেন, “আগামী তিন মাসের মধ্যে আরও পাঁচটা রাজ্যে ঢুকব। আমরা সেখানে ঢুকে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করব।”
বলেন, শুধু খড়দহের জন্য নয় এই ভোট ভারতবর্ষের জন্য। সবাই তাকিয়ে আছে তৃণমূলের ফলের দিকে। এর পর তাঁর সংযুক্তি, “সৌগত আর শোভনদেব এমন জুটি, এমন কম্বিনেশন ভূ-ভারতে নেই। কংগ্রেস আদর্শ বিকিয়েছে। আদর্শহীন দলকে ক্ষমা করা যায় না। এত ভাল (তৃণমূল) বিধায়ক সারা বাংলায় কোথাও পাবেন না।”
এর পরে বিধানসভা ভোটের পর দলবদল প্রসঙ্গে মুখ খুলতে শোনা যায় অভিষেককে। বলেন, “অনেকে ভয় পাচ্ছেন, আআবার যদি ভোটের পর বিজেপির গদ্দারগুলো ঢুকে পড়ে। আরে ঢুকতে দেব না। আমি আছি তো। আর যাঁরা দু’ একজন ঢুকছেন, তাঁদের অনেক প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। এত সস্তা নয়। আমি নেত্রীর পায়ে ধরে বলেছি যে, কর্মীদের আবেগকে মান্যতা দিয়ে আর যাই হোক বিশ্বাসঘাতকদের দলে ঢোকানো যাবে না।” তিনি আরও যোগ করেন, “৫ জন এমএলএ ঢুকেছেন, শুনে রাখুন, যদি দরজা খুলি না, কাল বিজেপি দল উঠে যাবে। আমরা দরজা বন্ধ করে রেখেছি। এবারের তৃণমূল আগের তৃণমূলের মধ্যে পার্থক্য আছে। আলাদা তৃণমূল এটা।”
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘সিএএ দরকার, রোহিঙ্গাদের চুলের মুঠি ধরে ওপারে পাঠাতে হবে,’ হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর