বারাসত: বাজারের থেকে কিছুটা দূরে আর পাঁচ জন ব্যবসায়ীর মতনই বসেছিলেন ছিলেন। ঝুড়ির ওপর দেওয়া ছিল পাতলা চাদরের আচ্ছাদন। কেউ উঁকিঝুঁকি দিচ্ছেন, কেউ আবার পাশ কাটিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু আর পাঁচ জন ব্যবসায়ীর মতন দামদরের হাঁকডাক দিচ্ছিলেন তাঁরা। সামনে এসে দাঁড়ান দুই ব্যক্তি। কী আছে প্রশ্ন করেন, উত্তরও মেলে। এরপর ব্যবসায়ী যখনই ঝুড়ির ওপর থেকে চাদর সরালেন, তখন আচমকা কলার চেপে ধরলেন দুই ক্রেতা। ফাঁস হল পর্দা। ক্রেতা সেজে দুই কচ্ছপ বিক্রেতাকে হাতেনাতে ধরল বন দফতর। ধৃতদের নাম সুমিত হালদার ও শম্ভু ঘোষ। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১০০টি বিরল প্রজাতির কচ্ছপ। উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলি নিয়ে আসা হয়েছে বারাসতে জেলা দফতরে।
জানা যাচ্ছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর একটি বাজারে অভিযান চালান বন দফতরের কর্তারা। যাতে আগে থেকে কেউ টের না পান, তার জন্য একেবারে ক্রেতা সেজেই পৌঁছে যান বাজারে। দুঁদে কর্তারা দেখেই বুঝতে পেরে যান, গলদ কোথায়! জানা যাচ্ছে, ওই দুই পাচারকারীর কাছে গিয়ে প্রশ্ন করেন দুই কর্তা। তাঁরা যখনই কচ্ছপ বিক্রি করতে যান, তখনই তাঁদের পাকড়াও করা হয়। এই দুই কচ্ছপ বিক্রেতার কাছে বিপুল কচ্ছপ কীভাবে এল, তা খতিয়ে দেখছেন বন দফতরের আধিকারিকরা। এর সঙ্গে পাচার চক্রের কোনও যোগ আছে কিনা, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানা ও গাজোল থানা সংলগ্ন ওই এলাকায় হানা দেয় রায়গঞ্জ বন বিভাগের কর্মীরা। বাজার থেকে এক কচ্ছপ বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়। বন আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, মূলত এই শীতের সময়েই কচ্ছপ পাচারকারীরা বেশি করে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তাই আগামী কয়েক মাস টানা এই অভিযান চলবে।