
সন্দেশখালি: চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। বাইরে বেরোতেই কার্যত ভয় পাচ্ছে ওরা। রাতের বিভীষিকা থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারেননি ওরা। তার মধ্যে আবার শনিবার ছিল উচ্চ-মাধ্যমিকের সংস্কৃত পরীক্ষা। বছর ভরের প্রস্তুতি পরীক্ষার হলে ছাপ ফেলতে পারল না। এমনটাই বলছে সন্দেশখালির দুই পড়ুয়া। শুক্রবার এলাকার অশান্তির সময়ে পুলিশ সন্দেহর বশে তুলে নিয়ে গিয়েছিল ওদের। সারাটা দিন থানায় থাকার পর আজ কী মানসিক পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছে সেটা ওরাই জানে!
শুক্রবার সকালে বেড়মজুর এলাকা তপ্ত হয়ে ওঠে। তেভাগা আন্দোলনের পীঠস্থানে দখল হয়ে যাওয়া জমি ফেরতের দাবিতে লাঠি, বাঁশ,ঝাঁটা হাতে মেঠো রাস্তায় নামেন গ্রামের মহিলারা। শিবু হাজরা,অজিত মাইতি,তোয়েব মোল্লাদের বিরুদ্ধে জনরোষ আছড়ে পড়ে। অ্যাকশন মোডে যায় পুলিশ। গ্রাম জুড়ে শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড়। অভিযোগ, সেই সময়ই পুলিশের হাতে আটক হয় দুই উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সন্দেহর বশে পুলিশ তাদের আটক করলেও অবশেষে রাতের বেলায় তাঁদেরকে ছেড়েও দেওয়া হয়।
আজ ছিল তাঁদের পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের দাবি, কালকের ঘটনার প্রভাব পড়েছে আজকের পরীক্ষায়। পুলিশের ভয়ে আতঙ্কের মধ্যেই পরীক্ষা দিয়েছেন। দু’জনই বলছেন, ভাল হয়নি পরীক্ষা। জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষায় বসলেও ভালভাবে পরীক্ষা দিতে না পারায় দায় কে নেবে? সেইটাও জানেন না তাঁরা।
এক পরীক্ষার্থী বলেন, “আমি বললাম স্যর সংস্কৃত পরীক্ষা আছে। তখন পুলিশ বলল চল আমার সঙ্গে। জিজ্ঞাসাবাদ করব। আমি বললাম কোথায় যাব। বলল চল না…। তারপর আমাদের নদীর ধারের একটা ঘরে রাখল। পরে যখন আমার মা অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে যখন এল টিভি-র সামনে তখন ওরা ছাড়ল আমায়।” অপর পরীক্ষার্থী বলেন, “ভায় হয়নি পরীক্ষা। ভয় লাগছে। এমন ছবি তো দেখিনি।” প্রসঙ্গত, গতকালের ঘটনার পর এক পরীক্ষার্থীর ঠাকুমা জানিয়েছিলেন, “আমার নাতিটা পরীক্ষা দিয়ে আসছিল। হঠাৎ করেই তাকে তুলে নিয়ে গেল। কী বলবেন আপনি! ওরা পুলিশ?”