উত্তর ২৪ পরগনা: রবিবার ভরসন্ধ্যায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা নৈহাটির মাতৃসদনের সামনে। এক সেনা জওয়ানের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে হইচই পড়ে যায় স্টেশনসংলগ্ন এলাকায়। জানা গিয়েছে, নিহত সেনা জওয়ানের নাম গুরপ্রীত সিং (৩৫)। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, দেহটি প্রথমে নৈহাটি স্টেশনে পড়ে থাকতে দেখেন অনেকেই। কিন্তু এরপর স্টেশন থেকে বেরিয়েই রাস্তার উপর মাতৃসদনের সামনে দেহটি শোয়ানো অবস্থায় উদ্ধার হয়। কীভাবেই বা এই ঘটনা ঘটল তা নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
নৈহাটি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রবিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটা নাগাদ আমরা শুনতে পাই জিআরপি স্ট্রেচারে করে আহত একজনকে আমাদের মাতৃসদনে নিয়ে এসেছিল। মাতৃসদনে আনার সময় ওই ব্যক্তির সঙ্গে দু’জন ছিলেন। জিআরপি যখন ওই যুবককে মাতৃসদনে নিয়ে আসে, সেখানে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারও ছিলেন। মাতৃসদনের সামনেই স্ট্রেচারে শোয়ানো যুবক মারা যান। এরপরই ওই যুবকের সঙ্গে যারা ছিলেন সেই দু’জন দেহটি ফেলে পালিয়ে যান। পুরসভার মাতৃসদনের সামনেই দেহটি রেখে পালিয়ে যান।”
অশোক চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “আমাদের কাছে খবর আসে। কিন্তু আমাদের পুরসভার কোনও মর্গ নেই। আমি তখন জিআরপির আইসিকে বলি, আপনারা দেহটি ফেলে এলেন এখন কী করা হবে? আমাদের তো এখানে মৃতদেহ রাখার জন্য মর্গ নেই। ওই যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন। একেবারে ভেসে যাচ্ছে রক্তে গা। ততক্ষণে মারাও গিয়েছে। তার পর জিআরপি-আরপিএফ লোক পাঠায়।”
নিহত জওয়ানের সঙ্গে একটি মোবাইল ফোন ছিল বলে জানান নৈহাটি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়। ঘন ঘন ফোনটি রিং হচ্ছিল। এরপরই আরপিএফের একজন ফোনটি ধরেন। এরপরই ফোনের ওপার থেকে জানানো হয় নিহত জওয়ানের নাম গুরপ্রীত সিং। আতপুরে ৬ ব্যাটেলিয়নের যে আর্মিক্যাম্প রয়েছে সেখানকার জওয়ান তিনি। পরে ক্যাম্প থেকে লোকজন আসেন। তাঁরা জানান, স্থানীয় ঠাকুরপাড়া এলাকায় কোনও বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, এই ঠাকুরপাড়া এলাকায় একটা বড় অংশ নিষিদ্ধপল্লী। ঠাকুরপাড়া থেকে একটি ঘড়ি উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রশ্ন উঠছে, কে ওই দুই যুবক, যাঁরা জওয়ানকে ফেলে রেখে পালিয়ে গেলেন। কেনই বা তাঁরা গুরপ্রীতের মৃত্যু দেখে সরে পড়লেন? এই মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কোনও দুর্ঘটনায় এই পরিণতি নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে ঠাকুরপাড়া এলাকায় সিসিটিভি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সেখানে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। ঘণ্টা দুই আগেই সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন ওই জওয়ান। তাঁর নিম্নাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। অথচ শরীরের আর কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Asansol: ইউক্রেন থেকে ফিরল ছাত্রী, তাসা-ব্যান্ড পার্টি নিয়ে ‘গ্র্যান্ড ওয়েলকাম’ আসানসোলে