উত্তর ২৪ পরগনা: “আমার মা-ই খুন করেছে বাবাকে। মায়ের ভালবাসা ছিল পাড়ার ছেলের সঙ্গে। দু’জনের ফাঁসি চাই।” বলতে বলতে বছর আঠারোর ছেলেটি কান্নায় ভেঙে পড়ল। প্রেমিকের সঙ্গে যোগসাজশ করে স্বামীকে খুনের অভিযোগ স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাট এলাকায়। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হলেন স্ত্রী ও প্রেমিক। অন্যদিকে কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তে পাঠাল পুলিশ।
উত্তর ২৪ পরগনা গাইঘাটা থানার সুবিদপুরের বাসিন্দা ৪৬ বছরের আমিনুর মোল্লা। গত ৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে প্রাথমিক প্রথা মেনে আমিনুরের দেহ কবর দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপর আসে নয়া মোড়। মৃত্যুর তিনদিন পরে পরিবারের সদস্যরা একটি মোবাইল ফোন খুঁজে পান। সেই মোবাইল ফোন থেকেই রহস্য দানা বাঁধে।
পরিবারের সদস্যরা মোবাইলে কল রেকর্ডিং শুনে জানতে পারেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাবলু সর্দারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে রয়েছে আমিনুলের স্ত্রীয়ের। যার জেরে বাবলু ও আমিনুরের স্ত্রী জোহরা মোল্লা পরিকল্পনা করে খাবারে বিষ মিশিয়ে আমিনুরকে খুন করেছে। এমনটাই অভিযোগ করে পুলিশের দ্বারস্থ হয় তাঁরা।
পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জোহরা মোল্লার ও বাবলু সর্দারের নামে আমিনুর মোল্লাকে খুন এবং খুন করে তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ করা হয় গাইঘাটা থানায়। এদিকে অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তদন্তে নেমে স্ত্রী জোহরা মোল্লা ও বাবলু সর্দারকে জিঞ্জাসাবাদ করে একাধিক অসঙ্গতি পেয়েছে পুলিশ। এর পরই দুজনকে গ্রেফতার করে গাইঘাটা থানার পুলিশ। অভিযোগ পেয়ে এদিন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে তুলে ময়না তদন্তে পাঠানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পরিবার অভিযোগ করেছে আমিনুরকে খুন করা হয়েছে। প্রথমে তাঁরা বুঝতেই পারেননি যে এটা অস্বাভাবিক মৃত্যু। এখন মৃত্যুর আসল কারণ খুঁজতে দেহ কবর থেকে তোলা হল। ময়নাতদন্তের পর আবার কবর দেওয়া হবে। পরিবারের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে এই পরীক্ষা বলে খবর।
এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত আমিনুরের ছেলে আরিফ মোল্লা বলেন, বাবাকে খুন করার জন্য মা ও বাবলু সরদার এর ফাঁসি চাই। ছেলের কথায়, পাপীদের ফাঁসি চাই। আমার মা আর গ্রামের একটা ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। বাবা মারা যাওয়ার সময় বুঝতে পারিনি। গত ৬ তারিখ সন্ধেবেলা একটা অনুষ্ঠান ছিল। সেদিন একটা মোবাইল ফোন তাঁর। তার কল রেকর্ডিংয়ে সন্দেহ হয় তাঁদের। মৃতের বউদি বলেন, আমার দেওরকে মেরেছে ওর বউ আর ওর প্রেমিক। আমরা দু’জনের সাজা চাই। এলাকার সাধারণ মানুষ অভিযুক্ত দুই জনের দৃষ্টান্তমমূলক সাজার দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিভেজা দুপুর, হাতে চুরুট! তখন গ্রাহকের কথাতেই বুঁদ ব্যবসায়ী, দোকানেই ঘটল যা ঘটার…