বিধাননগর: বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার গেস্ট হাউসে পর্নগ্রাফি শুটের অভিযোগ উঠল। এক যুবতীর অভিযোগ, কাজের নামে ডেকে এনে ওই গেস্ট হাউসে সেক্স ভিডিয়ো তৈরি করানো হয়। দেহ ব্যবসাও করানো হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ওই গেস্ট হাউসে মাদক কারবারের অভিযোগও এনেছেন ওই যুবতী। তাঁর অভিযোগ, কাজের নামে ডেকে এনে প্রথমে একটি গেস্ট হাউসে রাখা হয়েছিল তাঁকে। তার পর তাঁকে অন্য একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই এই অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ উঠেছে। ভিন রাজ্য থেকে মেয়েদের এনেও পর্ন শুট, সেক্স ভিডিয়োর লাইভ ব্রডাকাস্টিং করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যে গেস্ট হাউসে এই অসামাজিক কাজের অভিযোগ উঠেছে, তার মালিক পলাতক বলে জানা গিয়েছে। ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে যুক্তদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
খোদ বিধাননগরে সেক্স ব়্যাকেট এবং পর্ন শ্যুটিংয়ের অভিযোগ ওঠায় প্রশ্নের মুখে প্রশাসন। বাংলাদেশ, নেপাল ও ভিন রাজ্য থেকে তরুণীদের নিয়ে এসে জোর করে আটকে রেখে এই ব্যবসা চালানো হয় বলে অভিযোগ। নারায়ণ দাস নামে এক ব্যক্তি এই ব্যবসা চালান বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত নারায়ণকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি মিডলম্যানের কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে।
অভিযোগকারিণী বলেছেন, “৪ জানুয়ারি কাজের জন্য বিএল ব্লকের একটি গেস্ট হাউজে আসি। সেখানে আমাকে থাকতে বলে। আমি সেখানে থাকি। আমি অনুভব করি যে ওখানে হিডেন ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। ওখানে বেআইনি কিছু হচ্ছে। ওখানে যাঁরা আসে তাঁদের দিয়ে পর্ন ভিডিয়োর তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া মাদকও নেওয়া হয় ওখানে। মেয়েদের এমএমএস বানিয়ে লাইভ ভিডিয়োর ব্রডকাস্ট করা হয়। আমি ছয় সাত দিন থাকার পর নারায়ণ দাস আর একটি জায়গায় নিয়ে যায়। ওই গেস্ট হাউজে নিয়ে রাখে। সেখানেও পর্ন বানানো হয়। শুধু ইন্ডিয়ার মধ্যে নয় ইন্ডিয়ার বাইরেও ওরা ব্রডকাস্টিং করছে এবং পর্ন বিজনেজ চেন ওয়াইজ চলছে। এর সঙ্গে অনেকেই যুক্ত আছে। নারায়ণ দাস ওটা দেখাশোনা করে এবং মেয়েদের পরিচালনা করে। আমার সঙ্গে তিনটে মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। তাঁদের আনা হয়েছিল দিল্লি, গুরুগ্রাম, হরিয়ানা থেকে। একজন ছিল ভোজপুরি সিনেমার আইটেম গার্ল। আমি কাজের খোঁজে এসেছিলাম। এসে এসব কীর্তি দেখলাম।” ১ ফেব্রুয়ারি তিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগ পেয়েই নড়ে চড়ে বসে পুলিশ। হানা দিয়ে মিডলম্যান নারায়ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। যে দুটি গেস্ট হাউসের নামে অভিযোগ করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি গেস্ট হাউসের মালিক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অপর গেস্ট হাউসের মালিক পলাকত। তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। যে যুবতী এই অভিযোগ করেছেন, তাঁর বাড়ি কেষ্টপুর এলাকাতেই। তিনি কাজে এসেছিলেন বলে দাবি করলেও, কী কাজ করতে এই গেস্ট হাউসে এসেছিলেন, তা নির্দিষ্ট করে জানাননি। এই ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখছে বিধাননগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।