
বাঁকুড়া: ক্ষোভে ফুঁসছেন আশা কর্মীরা। মাসিক ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া ৪ মাসের ইনসেনটিভ প্রদান, শর্তহীনভাবে মোবাইল ফোন কেনার স্বাধীনতা দেওয়া-সহ একগুচ্ছ দাবিতে রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি শুরু করেছেন আশা কর্মীরা। এদিন কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে বাঁকুড়া জেলায় প্রায় প্রতিটি ব্লকেই আশা কর্মীদের বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে।
এদিকে রাজ্যের জন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই আশা কর্মীরাই। গ্রাম-গঞ্জে গর্ভবতীতের খোঁজ খবর থেকে শুরু করে প্রসবের পর শিশুর স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর রাখেন এই আশা কর্মীরা। হাসপাতালে প্রসব করানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা থাকে আশা কর্মীদের। এছাড়াও স্বাস্থ্যের যাবতীয় প্রকল্প ও সমীক্ষার কাজ করানো হয় এই আশা কর্মীদের। আশা কর্মীরা বলছেন, এত কাজের পরেও মাসিক ভাতা হিসাবে তাঁদের দেওয়া হয় মাত্র ৫ হাজার ২৫০ টাকা। বিভিন্ন প্রকল্প ও সমীক্ষার কাজে ইনসেনটিভ পাওয়ার কথা থাকলেও ৪ মাস ধরে তাঁদের সেই ইনসেনটিভ বকেয়া পড়ে রয়েছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এদিকে দিনের পর দিন কাজের চাপ বাড়িয়েই চলেছে দফতর। সম্প্রতি কিছু শর্তের সাপেক্ষে মোবাইল কেনার জন্য আশাকর্মীদের টাকা দেওয়া হয়েছে। শর্ত মেনে মোবাইল ফোন কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন আশা কর্মীরা। তাই অবিলম্বে ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া ইনসেনটিভ প্রদান ও মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে শর্ত প্রত্যাহারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন এ রাজ্যের আশাকর্মীরা।
কলকাতাতেও দেখা গিয়েছিল আশা কর্মীদের লাগাতার আন্দোলন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, এত কিছুর পরও তাঁদের দাবিতে কোনও আগ্রহই দেখায়নি সরকার। সে কারণেই এবার রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতির পথে হেঁটেছেন তাঁরা। কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে বাঁকুড়ার প্রায় প্রতিটি ব্লকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে জমায়েত করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আশা কর্মীরা। দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী আশাকর্মীরা। একই ছবি দেখা যায় হুগলিতেও। তারকেশ্বর গ্রামীন হাসপাতালে এক গুচ্ছ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হন তারকেশ্বর ব্লকের একশোর উপর আশা কর্মীরা। এদিন আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভে সামিল হন আশা কর্মীরা। মাদারিহাট, কালচিনি সহ বিভিন্ন এলাকায় এদিন বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এদিকে কর্মবিরতির জেরে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবা যে কিছুটা হলেও ব্যহত হবে তা মেনে নিচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরাও।