অনুব্রতর আশঙ্কাই সত্যি! আউশগ্রামের তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার দলেরই ৩ জন

Ausgram TMC Leader Murder Case: সেদিন অনুব্রত বলেছিলেন, "তৃণমূল চুপ করে থাকতে পারে, কিন্তু কেষ্ট মণ্ডল চুপ করে থাকবে না। আগামী পনেরো দিনের মধ্যে চঞ্চলের খুনিরা যদি ধরা না পড়ে, তাহলে ভয়ঙ্কর খেলা হবে।''

অনুব্রতর আশঙ্কাই সত্যি! আউশগ্রামের তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার দলেরই ৩ জন
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 12, 2021 | 11:00 PM

পূর্ব বর্ধমান: আউশগ্রামের (Ausgram) দেবশালার তৃণমূল (TMC) পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সির ছেলে চঞ্চল বক্সির খুনে নয়া মোড়। তৃণমূল নেতার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল দলেরই তিন নেতাকে। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)-এর আশঙ্কাই সত্যি হল!

গত মঙ্গলবার খুন হন আউশগ্রামের দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সির ছেলে চঞ্চল বক্সি। তিনি দেবশালা অঞ্চলের প্রাক্তন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিও ছিলেন। রবিবার ওই খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম আসানুর মোল্লা, মনি হোসেন মোল্লা এবং বিশ্বরূপ মণ্ডল। ধৃতদের মধ্যে আসানুরের বাড়ি কলমডাঙ্গা গ্রামে। তিনি দেবশালা অঞ্চলের যুব তৃণমূল সভাপতি পদে রয়েছে এবং দেবশালা পঞ্চায়েতের সদস্যও। মনি হোসেন মোল্লাও দেবশালা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তাঁর বাড়ি ভাতকুণ্ডা গ্রামে। দেবশালা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তথা লবনধার গ্রামের বাসিন্দা হিমাংশু মণ্ডলের ছেলে বিশ্বরূপ মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার আউশগ্রামের গেরাই গ্রাম থেকে আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি আবদুল লালনের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া সেরে বাবা শ্যামল বক্সিকে নিয়ে বাইকে বাড়ি ফেরার পথে জঙ্গলের ভিতর রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন চঞ্চল বক্সি। দুটি বাইকে চড়ে জনা চারেক দুষ্কৃতী গুলি চালায় তাঁকে। চলন্ত মোটর বাইক থেকে রাস্তায় গড়িয়ে পড়েন শ্যামলবাবু ও তাঁর পুত্র চঞ্চল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চঞ্চলের।

এই খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে ওঠে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি পিস্তল। মৃত চঞ্চলবাবুর বাবা শ্যামল বক্সি জানান, রাস্তায় দুটি মোটর বাইক তাঁদের ওভারটেক করে তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। দুটি বাইকে চার থেকে পাঁচজন ছিল বলে দাবি শ্যামল বাবুর। মোট পাঁচ রাউন্ড গুলি চালানো হয়।

তৃণমূল কংগ্রেসের ভাল্কী অঞ্চল সভাপতি অরূপ মিদ্যা, আউশগ্রাম ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলিরা দাবি করেন বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতীরাই গুলি চালিয়েছে। কারণ, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে প্রচুর মানুষ ভিড় করছেন। চঞ্চলবাবু এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। সেই রাগেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। কিন্তু খোদ মৃত তৃণমূল নেতার বাবাই সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তিনি সন্দেহ করেন দলেরই কেউ মেরেছেন তাঁর ছেলেকে।

এদিকে এই প্রেক্ষিতে দিন দুয়েক আগে মৃত চঞ্চলবাবুর বাড়িতে যান অনুব্রত মণ্ডল। সেখান থেকে ভয়ঙ্কর খেলার নিদান দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন বিজেপির কেউ এই ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারে। তার পর নিজেই বলেন চঞ্চলবাবুদের কোনও রাজনৈতিক শত্রু নেই। তাঁর দলের কেউ যদি যুক্ত থাকেন তাদের গুলি করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সেদিন অনুব্রত বলেছিলেন, “তৃণমূল চুপ করে থাকতে পারে, কিন্তু কেষ্ট মণ্ডল চুপ করে থাকবে না। আগামী পনেরো দিনের মধ্যে চঞ্চলের খুনিরা যদি ধরা না পড়ে, তাহলে ভয়ঙ্কর খেলা হবে।” তাঁর আরও মন্তব্য, “আমার মনে হয় বিজেপি জড়িত। আমি চাই না অশান্তি হোক, কিন্তু অশান্তি হলে খুব খারাপ হবে। আর দলের কেউ হলে তাকে তো আগে গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত।” আর এদিন সত্যিই তাঁর দলেরই তিন নেতাকে চঞ্চলবাবুর খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করল পুলিশ!

আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: ‘কেষ্ট চুপ থাকবে না’, দলের কর্মীকেই গুলি করার নিদান অনুব্রতর!