Anubrata Mondal: ‘কেষ্ট চুপ থাকবে না’, দলের কর্মীকেই গুলি করার নিদান অনুব্রতর!
Anubrata Modal: "তৃণমূল চুপ করে থাকতে পারে, কিন্তু কেষ্ট মণ্ডল চুপ করে থাকবে না। আগামী পনেরো দিনের মধ্যে চঞ্চলের খুনিরা যদি ধরা না পড়ে, তাহলে ভয়ঙ্কর খেলা হবে।''
দুর্গাপুর: বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Manbdal)। দলীয় কর্মীর খুনের কিনারা না হলে ‘ভয়ঙ্কর খেলা’র নিদান দিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। খুনের ঘটনায় দলের কেউ যুক্ত থাকলে তাকেও গুলি করে মেরা ফেলার নিদান দিলেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা।
এদিন দুর্গাপুরের বুদবুদের তৃণমূল (TMC) পরিচালিত দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বক্সীর ছেলে চঞ্চল বক্সীর খুনের ঘটনায় তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান অনুব্রত। তৃণমূল নেতার খুনে বিচার চেয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। অনুব্রতর হুঁশিয়ারি, খুনে অভিযুক্তরা ১৫ দিনের মধ্যে গ্রেফতার হবে। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এখানেই থামেননি। বলেন, তাঁর দলের কেউ এই খুনে যুক্ত থাকলে গুলি করা হবে তাকেও!
বৃহস্পতিবার দেবশালা গ্রামের বক্সী পাড়ায় দলের কর্মী চঞ্চল বক্সীর বাড়িতে যান অনুব্রত মণ্ডল। কথা বলেন মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে । আর এরপর বাইরে বেরিয়েই অনুব্রতর হুঁশিয়ারি, “তৃণমূল চুপ করে থাকতে পারে, কিন্তু কেষ্ট মণ্ডল চুপ করে থাকবে না। আগামী পনেরো দিনের মধ্যে চঞ্চলের খুনিরা যদি ধরা না পড়ে, তাহলে ভয়ঙ্কর খেলা হবে।” তাঁর আরও মন্তব্য, “আমার মনে হয় বিজেপি জড়িত। আমি চাই না অশান্তি হোক, কিন্তু অশান্তি হলে খুব খারাপ হবে। আর দলের কেউ হলে তাকে তো আগে গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত।”
এরপর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরতে না পারলে ভয়ঙ্কর খেলা শুরু হয়ে যাবে। আর তাঁর দলের কোনও কর্মী জড়িত থাকলে গুলি করে দেওয়া হবে। এদিকে দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বক্সীর গলাতেও ছিল বিদ্রোহের সুর। যদি ছেলের খুনের ঘটনার কোন কিনারা না হয় তাহলে প্রয়োজনে শুধু পঞ্চায়েত থেকে পদত্যাগ করবেন তা নয়, যাতে বিপক্ষ কোনও গোষ্ঠী বোর্ড তৈরি করতে না পারে তারও ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুবিচার না পেলে দল ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল পরিচালিত দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সী।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ছেলের সঙ্গে মোটর বাইকে করে বাড়ি ফেরার সময় শ্যামল বক্সিদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় চার-পাঁচজন আততায়ী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শ্যামলবাবুর ছেলে চঞ্চলের। দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বক্সীর ছেলে চঞ্চলকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পরপরই ঘটনার দায় বিজেপির ওপর চাপিয়েছিল তৃণমূল। দলের টিকিটে নির্বাচিত আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার দাবি করেছিলেন বিজেপির কর্মীরাই এই খুনের সঙ্গে জড়িত। তাদের দলের আশ্রয়ে বেড়ে ওঠা দুষ্কৃতীরাই এই অপকর্ম ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বৃহস্পতিবার দলের বিধায়কের এই তত্ত্ব কার্যত খারিজ করে দিলেন দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সী। ছেলের মৃত্যুর পেছনে বিজেপি রয়েছে বলে মানতে পারছেন না তিনি। এই প্রেক্ষিতে বেফাঁস মন্তব্য করলেন অনুব্রত মণ্ডল।
আরও পড়ুন: অরবিন্দকে খুন করেছিল গুঞ্জনরাই, ১৬ বছর বাদে দোষী সাব্যস্ত রোমা ঝাওয়ার অপহরণ-কাণ্ডের মূল পাণ্ডা