
পাণ্ডবেশ্বর: এমনও হয়! একি ‘মায়া’-র খেলা! নাকি মায়ারানির খেলা। এক ভোটারের নাম রাজ্যের ৪৪ জায়গায়। এনুমারেশন ফর্মের কিউআর কোড স্ক্যান করতে গিয়ে চমকে উঠলেন বিএলও। শুধু বিএলও কেন, যাঁর এনুমারেশন ফর্ম স্ক্যান করা হয়েছে, তিনিও বিস্মিত। পদবী বদলে কীভাবে রাজ্যের ৪৪ জায়গায় ভোটার হয়ে গেলেন তিনি, নিজেও বুঝতে পারছেন না পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের মায়ারানি গোস্বামী। বিষয়টি সামনে আসতেই রাজনৈতিক চাপানউতোরও বেড়েছে।
পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার ডিভিসি পাড়ার বাসিন্দা মায়ারানি গোস্বামী। ৪৭ নম্বর বুথের ভোটার তিনি। সরকারি ঘর পেয়েছেন। সেখানেই মেয়েকে নিয়ে থাকেন। স্বামী মারা গিয়েছেন। তাঁর এনুমারেশন ফর্মের কোড স্ক্যান করতে গিয়ে রাজ্যের ৪৪ জায়গায় ভোটার হিসাবে তাঁর নাম পেয়েছেন বিএলও। বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ দিনাজপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে তাঁর নাম। বিভিন্ন জায়গায় বদলে গিয়েছে তাঁর পদবী। কোথাও মায়ারানি প্রামাণিক, কোথাও মায়ারানি মণ্ডল। সেই মতো তাঁর স্বামীর পদবীও বদলেছে।
বিষয়টি সামনে আসার পর জনে জনে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করছেন। কিন্তু, উত্তর নেই তাঁর কাছে। নিজের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে মায়ারানি বললেন, “গতকাল যখন লোক এসেছিল, তখন আমি জানলাম। কাগজগুলো দেখল। দেখে বলল, তোমার কোনও ভয় নেই।”
কীভাবে ৪৪টি ভুয়ো এপিক কার্ড হল? তা নিয়ে অবশ্য রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি রবীন পাল বলেন, “অন্যের বাড়িতে রান্না করে খান। তিনি নিজে থেকে এসব করিয়েছেন, এটা আমি বিশ্বাস করতে পারব না। নির্বাচন কমিশনের যাঁরা নাম তুলছেন, তাঁদের কিছু ভুল হতে পারে। এটা তদন্ত করে দেখুক, সব জায়গায় উনি ফর্ম পূরণ করেছেন কি না।”
পাল্টা তৃণমূলকে তোপ দেগে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “পাণ্ডবেশ্বরের এই ঘটনা দেখে নিশ্চয় আমরা বুঝতে পারছি, কেন এসআইআর প্রয়োজন। এই কারণে তৃণমূল কংগ্রেস বাধা দিচ্ছে। এই ভুয়ো ভোটাররাই তৃণমূলের চালিকাশক্তি। হয়তো এই মহিলা জানেনও না তাঁর ৪৪ জায়গায় নাম রয়েছে।”