আসানসোল: স্কার্টের নীচে রঙিন লেগিন্স ও জামার ভেতর রঙিন গেঞ্জি ইনার পরে আসছিল ছাত্রীরা। তাতে স্কুলের ড্রেস কোড ও নিয়ম শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। এই কারণ দর্শিয়ে ছাত্রীদের লেগিন্স ও গেঞ্জি খুলিয়ে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ ঘিরে সরগরম উঠল আসানসোলের বারাবনির এক স্কুল। বারাবনির ‘পুঁচরা ভগবান মহাবীর দিগম্বর জৈন সরাক উচ্চ বিদ্যালয়’ এর ঘটনা। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ উপাধ্যায়কে স্কুল থেকে বদলিরও দাবি তোলেন তাঁরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক-সহ স্কুলের অন্য শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁদের বক্তব্য, রঙিন লেগিন্স খুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হলেও, ইনারগেঞ্জি খোলার কথা বলেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্যে উঠে আসে অন্য তত্ত্ব। অভিযোগ, কয়েকদিন ধরেই স্কুলের ছাত্রীদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে সব ছাত্রীরা স্কুলে স্কার্টের নীচে রঙিন লেগিন্স পরে এসেছে, তাঁরা যেন বাথরুমে গিয়ে সেটি খুলে ফেলে। স্কুলের তরফে ছাত্রীদের একথা বলা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই খবর বৃহস্পতিবার ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যে। অভিভাবকরা এদিন দুপুরে দলে দলে স্কুলে হাজির হন। চলতে থাকে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ চলাকালীন ছাত্রীরা কার্যত কেঁদে ফেলেন। ছাত্রীদের মধ্যে আবার কেউ কেউ অজ্ঞানও হয়ে যায়। উত্তাল হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর। ছুটে আসতে হয় বারাবনি থানার পুলিশকেও।
ছাত্রীদের মায়েদের অভিযোগ, স্কুলের প্রধানশিক্ষক এই লজ্জাজনক ঘটনা ঘটাচ্ছেন। অবিলম্বে তাঁকে বরখাস্ত করতে হবে। অন্যদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের বক্তব্য, অভিভাবকদের অভিযোগ সঠিক নয়। স্কুলের ড্রেসকোডের নির্দেশনামার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সরকারি নিয়ম মেনে শুধু সাদা জামা ও নীল স্কার্ট অর্থাৎ স্কুলের পোশাক পরে আসতে বলা হয়েছে। শীতের সময়ে অন্য রঙের লেগিন্স পরতে নিষেধ করা হয়নি। এখন গরমের পড়ে গিয়েছে। সেই কারণে লেগিন্স পরতে বারণ করা হয়েছে। ইনার গেঞ্জি খোলানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
অভিভাবকদের বক্তব্য, “মেয়েরা বড় হয়েছে। বিভিন্ন কারণে শারীরিক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। যে কারণেই লেগিন্স পরিয়ে পাঠাতে হয়। কিন্তু লেগিন্স খুলে নেওয়া হচ্ছে। তারপর আবার জামার ভেতর গেঞ্জিও বাথরুমে নিয়ে গিয়ে খোলানো হচ্ছে।” অভিভাবকদের আরও দাবি, “যদি গরম লাগার প্রশ্ন হয়, তাহলে তো সেটা শিক্ষকের উপলব্ধি করার কথা নয়। ওই পোশাকের ব্যাপারে অভিভাবকদের জানাতে পারতো স্কুল কর্তৃপক্ষ। খুলিয়ে দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে?” ছাত্রীদের অভিযোগ, গত সাত আটদিন ধরে এই ঘটনা চলছে। বৃহস্পতিবারও অনেকের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি ছাত্রীদের। আপাতত স্কুলে এখনও এই বিষয়টি নিয়ে টানাপোড়েন চলছে।
আরও পড়ুন: নির্জন গঙ্গার ঘাট, সাতসকালেই বিদেশিনীর সঙ্গে মায়াপুরের ভক্তের চরম অবস্থা দেখে স্তব্ধ ইস্কন