আসানসোল : গত কয়েকদিন ধরেই আসানসোলের কুলটি অঞ্চলে এক বাড়িতে ঘটছে অলৌকিক ঘটনা! বাড়ির দেওয়ালে বা মেঝেতে এমনকি সিলিং-এ যখন তখন জমে যাচ্ছে জল। এই সব অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে গত দেড়মাস ধরে। এমনটাই দাবি বাড়ির গৃহকর্ত্রীর। তাঁর ক্লাস ফোরের মেয়ে বাড়িতে যখন একা থাকছে বা একা পড়াশোনা করে তখনই এই ধরণের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি। ওই শিশুর গায়ে কেউ জল ঢেলে দিচ্ছে বা থুতু ছিটিয়ে দিচ্ছে, এমন সব কথাও বলা হচ্ছে।
আসানসোলের নিয়ামতপুরের বিষ্ণুবিহারের সেন বাড়ির ঘটনা। সদস্যদের অভিযোগ, জলভূতের পাল্লায় পড়ে হোম, যজ্ঞ, বাবা ফকির কোনও কিছুই বাদ রাখেননি তাঁরা।
বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যরা বাড়িতে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা জানান, বাড়ির যেখানে সেখানে জল পড়ছে। কখনও মেঝেতে, কখনও দেওয়ালে আবার সিলিংয়েও৷ রীতিমত জলভূত! শুধুমাত্র বাড়ির ওই শিশুকন্যাই সেই জল পড়া দেখতে পাচ্ছে, তার গায়েই জল পড়ছে। বাড়ির গৃহকর্ত্রী জানান, প্রথমে মেয়ের কথা বিশ্বাস করেননি তিনি। পরে দেখা যায় আচমকা বাড়ির সমস্ত জায়গা ভিজে যাচ্ছে।
পাড়া প্রতিবেশীদের গৃহকর্ত্রী ডেকে দেখান যে জল পড়ে আছে গোটা বাড়িতে। ভূতের গুজব ছড়াতেই প্রতিবেশীরা জল-ভূত দেখতে ভিড় জমান। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে মোবাইলে ‘ঘোষ্ট ডিটেকটর’ দিয়ে ভূত খুঁজতেও শুরু করেন গোটা বাড়িতে। যদিও ওই নাবালিকা ক্যামেরার সামনে জানিয়েছে, যে তার এই বিষয়টি নিয়ে কোনও ভয় লাগছে না।
ওই পরিবারের অনুরোধে কুলটির ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বিজ্ঞান কর্মীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ওই বাড়িতে বিজ্ঞানকর্মীরা এবং সাংবাদিকরা থাকলেও কোনও রকমের জল পড়া বা অন্য কোনও অপ্রাকৃতিক ঘটনা ঘটেনি। বোঝা যাচ্ছে, বাড়িতে যখন নাবালিকা একা থাকে তখনই তার সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে। বারবার প্রশ্ন করায় তার মা বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘আমি বিষয়টির প্রচার চাই না।’
বিজ্ঞানকর্মীদের দাবি, রাতে তিন ঘণ্টা ওই বাড়িতে থাকলেও জল পড়তে দেখা যায়নি। কোথাও না কোথাও বিষয়টির মধ্যে কোনও কৌশল কিংবা মিথ্যে বলার প্রবণতা আছে বলে জানান তিনি। বিজ্ঞান কর্মীরা বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই মহিলাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে শিশুকে ও কাউন্সেলিং করানো উচিত। পুরো বিষয়টি মেয়েকে ঘিরেই হচ্ছে। এর মধ্যে কোথাও কোনও অলৌকিকত্ব, অতিপ্রাকৃতিক কিছু নেই বলেই জানানো হয়েছে।