পশ্চিম বর্ধমান: ফের ভয়াবহ পথদুর্ঘটনা রাজ্যে। এবার ঘটনাস্থল দুর্গাপুর। সোমবার দুর্গাপুরের ভিরিঙ্গি মোড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রেকারের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে একটি ট্রাক। এই ঘটনায় দুই বাইক আরোহী-সহ জখম হন মোট দশ জন।
১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে ভিরিঙ্গি মোড়ে বর্ধমানের দিক থেকে আসানসোল যাওয়ার যে লেন, সেখানে সোমবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। একটি ট্রেকার আসছিল। হঠাৎই পিছন থেকে ছুটে আসা একটি ট্রাক আচমকাই ওই ট্রেকারটিকে ধাক্কা মারে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই ঘটনা ঘটে।
ট্রেকারে সওয়ার আট যাত্রী ও দুই বাইক আরোহী এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দুর্গাপুর থানার পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি ধাক্কা মারে ট্রেকারে। এরপর একটি বাইককেও ধাক্কা মারার পর ডিভাইডারে উঠে যায় সেটি। ভয়ঙ্কর আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয় ভিরিঙ্গি মোড়ে। বেশ কিছুক্ষণ জাতীয় সড়কের একদিকে যান চলাচলও ব্যাহত হয়।
গত সপ্তাহেই পাণ্ডুয়ায় এক পথদুর্ঘটনা ঘটে। পান্ডুয়ার কাকলি সিনেমাতলা এলাকায় বর্ধমানের দিক থেকে চুঁচুড়ার দিকে যাচ্ছিল একটি লরি। হঠাৎই মাঝ রাস্তায় এক ব্যক্তি চলে আসেন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে রাস্তার মাঝেই দাঁড়িয়ে পড়ে লরিটি। তখন লরির পিছন ছিল একটি ছোট হাতি গাড়ি।
সেই গাড়িটি সজোরে ধাক্কা মারে সামনের লরিটিকে। ছোট হাতি গাড়িতে থাকা চালক ও খালাসি দু’জনই আটকে পড়েন গাড়ির কেবিনের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা ও দমকলের চেষ্টায় দু’জনকে উদ্ধার করা হয়। দমকলের কাটার মেশিন দিয়ে দু’জনকেই উদ্ধার করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে উদ্ধার কাজ। দু’জনকেই উদ্ধার করে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে সম্প্রতি পুরুলিয়ার গোপালপুর থেকে যাত্রীদের নিয়ে একটি বেসরকারি বাস বাঁকুড়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু ছত্রবাইদ গ্রামের কাছে বেসরকারি বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইন্দপুর থানার পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। স্থানীয় বাসিন্দা-সহ পুলিশ প্রশাসন আহতদের উদ্ধার করে ইন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানেই দশ জনের চিকিৎসা চলছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দু’জনকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি নদিয়ার দুর্ঘটনার স্মৃতিও এখনও টাটকা। পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১৮ জন শ্মশানযাত্রী। মৃতদেহ সত্কার করতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। উত্তর চব্বিশ পরগনার বাগদার পারমদন এলাকার বাসিন্দা শিবানি মুহুরির মৃত্যুর পর ঠিক হয় দেহ সত্কার করা হবে পাশের জেলা নদিয়ার নবদ্বীপে।
সেইমতো রাতেই আত্মীয়, পরিজন, গ্রামবাসী মিলিয়ে পঁচিশ-ছাব্বিশজন মৃতদেহ নিয়ে মালবাহী গাড়িতে সত্কারের জন্য রওনা হন। নদিয়ার ফুলবাড়িতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেই শববাহী গাড়িটি। হাঁসখালি থানার ফুলবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাথর বোঝাই লরিতে সরাসরি ধাক্কা মারে শববাহী ওই গাড়িটি।