
কেশিয়াড়ি: বাড়ির পিছনে গিয়ে ভাত-মাংস খাচ্ছিল। শুধু তাই নয়, এরপর দুই বন্ধু মিলে মদ্যপান করছিল। তারপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন দু’জন। মৃত্যু দুই নাবালকের। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি থানার পতিবাঁধ এলাকার ঘটনা।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি থানার পতিবাঁধ এলাকার ঘটনা। দু’জনেরই বাবা-মা অন্যত্র কাজকর্ম করতেন। মাঝে মধ্যে বাড়ি আসতেন তাঁরা। দুই বন্ধু রাহুল ও সন্দীপ সারাদিন একসঙ্গেই থাকত। পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে রাহুলের বাড়িতে দু’জনে একসঙ্গে মাংস-ভাত খায়। তারপরই বছর ১৩-র দুই কিশোর বাড়ির পিছনে একসঙ্গে মদ্যপান করছিলেন। পরে রাহুলের বাড়ির বারান্দায় একসঙ্গেই শুয়ে পড়ে দু’জনে।
রবিবার ভোর থেকে শুরু হয় বমি, অসহ্য গলা-বুক জ্বালা এবং শ্বাসকষ্ট। বাড়িতে তখন রাহুলের বছর ১৬-র দিদি ছাড়া আর কেউই ছিল না। সেই দিদিই প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করে দু’জনকে নিয়ে যায় কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার কিছু পরেই চিকিৎসকেরা সন্দীপ-কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাহুলকে রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার রাতেই মৃত্যু হয় তার। সন্দীপের মৃতদেহও ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুরে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপের বাড়ি খড়গপুর গ্রামীণ থানার ভালুকমাচা এলাকায়। কেশিয়াড়িতে তার মামাবাড়ি। মামার মৃত্যুর পর মামিমা তাঁর সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাওয়ায় সন্দীপ আর তার মামাবাড়িতে থাকত। সন্দীপের বাবা মহারাষ্ট্রে কাজ করেন। সেখান থেকে অনলাইন মাধ্যমে ছেলেকে টাকা পাঠিয়ে দিতেন বলে জানা গেছে স্থানীয় সূত্রে। অপরদিকে, রাহুলের বাড়ি কেশিয়াড়ির পতিবাঁধে। তার বাবা-মাও বাইরে কাজ করতেন। বাড়িতে রাহুল আর তার দিদি থাকত। সন্দীপ তাদের বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় কাটাত।
শনিবার সন্ধ্যায় সন্দীপের বাবা টাকা পাঠালে দুই বন্ধু গিয়ে মাংস কিনে আনে। সেই সঙ্গে একটি বিলিতি মদও কিনে নিয়ে আসে বলে জানিয়েছে রাহুলের দিদি। তারা তিনজন একসাথে মাংস-ভাত খাওয়ার পর, দুই বন্ধু মদ্যপান করতে বাড়ির পিছনের দিকে যায় বলেও জানিয়েছে। দিদি বলে, “এরপর আমি শুয়ে পড়ি। ওরা অনেক রাতে এসে বারান্দায় শুয়ে পড়ে। ভোরের দিকে আমার ভাই এসে বলে, দিদি বুকে খুব যন্ত্রাণা হচ্ছে। গলা জ্বালা করছে। তার আগে ওরা বমিও করে। সন্দীপ কিছু বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলোনা। আমিই পাশের বাড়ির জেঠু সহ লোকজনদের ডেকে আনি। তারপর হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।