এ তো অট্টালিকা! নিষিদ্ধপল্লিতে নাবালিকা উদ্ধার করতে গিয়ে হাঁ পুলিশ, এখানেও ‘কাটমানি’?

Police Amazed by an illegal Construction in Red Light Area: এক নাবালিকাকে উদ্ধার করতে গিয়ে  বিশাল অবৈধ নির্মাণের হদিশ পেয়ে কার্যত হাঁ হয়ে গিয়েছে পুলিশ। কে বানাল এ বাড়ি? অনুমতিই বা কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে? উত্তর খুঁজছে তাজ্জব বনে যাওয়া পুলিশ।

এ তো অট্টালিকা! নিষিদ্ধপল্লিতে নাবালিকা উদ্ধার করতে গিয়ে হাঁ পুলিশ, এখানেও 'কাটমানি'?
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Aug 27, 2021 | 4:37 PM

আসানসোল: এ যেন নিষিদ্ধপল্লির ভিতর এক আস্ত গোলকধাঁধা। ছোট ছোট ঘরগুলির মধ্যেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে প্রাসাদোপম বাড়ি। সেখান থেকেই চলে নিষিদ্ধ কাজ! দোকানের স্টলের মতো এক একজন যৌনকর্মীর ‘দোকান’! এক নাবালিকাকে উদ্ধার করতে গিয়ে  বিশাল অবৈধ নির্মাণের হদিশ পেয়ে কার্যত হাঁ হয়ে গিয়েছে পুলিশ। কে বানাল এ বাড়ি? অনুমতিই বা কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে? উত্তর খুঁজছে তাজ্জব বনে যাওয়া পুলিশ। আর এই খবর পেয়ে পুরনিগম জানাচ্ছে, শীঘ্রই ভাঙা হবে এই বাড়ি।

আসানসোলের কুলটির লছিপুর নিষিদ্ধপল্লি। সেখানেই এক নাবালিকা উদ্ধার করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। ওই জায়গায় বিশাল অবৈধ নির্মাণের হদিশ পেয়েছে তারা। এ যে রীতিমতো দেহ ব্যবসার মাণ্ডি খুলে বসেছে মাফিয়ারা! কিন্তু ওই মাণ্ডির জন্য ছিল না পুরনিগমের কাছে কোনও নির্মাণের অনুমতি। কমার্শিয়চাল বিল্ডিং বানাতে এনওসি-র পরোয়া নেই। নেওয়া হয়নি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের কাছে কোনও অনুমতি। কিন্তু এই অট্টালিকা বানানোর পিছনে কে বা কারা রয়েছে? তা নিয়ে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত।

জানা গিয়েছে, গত ৪ অগস্ট রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪৭ জন নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছিল এই লছিপুর নিষিদ্ধপল্লি থেকে। তারপরেই অবৈধ ওই মাণ্ডির বা বিল্ডিং-এর ১৫০টি ঘর সিল করে দেয় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ নাকি জানতই এমন কোনও বিল্ডিং আছে সেখানে। নিষিদ্ধপল্লিতে গোলকধাঁধার মতো তৈরি বিলাসবহুল প্রাসাদোপম এই বাড়ি নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। প্রথমত সেখানে কীভাবে এমন বাড়ি তৈরি করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। স্থানীয় মানুষের অবশ্য অভিযোগ, রাতারাতি এই ভবন তৈরি হয়নি। এটি তৈরি করতে কয়েক বছর লেগেছে। পুলিশ প্রশাসন, পুরপ্রশাসন, শাসকদলের মদত ছাড়া এই নির্মাণ কোনও মতেই সম্ভব নয়। তাহলে প্রশ্ন উঠছে কার মদতে লছিপুরে এই বাড়ি নির্মিত হয়েছিল?

এই অবৈধ নির্মাণে ‘কাটমানি’ কার পকেটে গেল, এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই স্থানীয় মাফিয়া রাজ সোলাঙ্কি সহ ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ এমন একজন ব্যক্তির সন্ধান করছে, যিনি নিজেকে এলাকার সর্বেসর্বা বলে দাবি করেন। সেই ব্যক্তি এখন পলাতক। আপাতত বিদেশে ঘাঁটি গেড়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এদিকে পুরনিগম জানাচ্ছে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে।

আসানসোল পুরনিগমের পুরপ্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, নিষিদ্ধপল্লি লছিপুর এলাকায় অবৈধভাবে নির্মিত ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হবে। তার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, পুরনিগমকে অন্ধকারে রেখে এই নির্মাণ করা হয়েছিল। পুরনিগম এই ধরনের নির্মাণ কখনও বরদাস্ত করবে না। শিগগিরই ওই জায়গায় অবৈধ নির্মাণগুলি ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। শুধু ওই বিশাল মাণ্ডিই নয়। লছিপুরের যৌনপল্লী এলাকার এনসিসি ক্লাব ও মাহি লায়ন্স ক্লাব সিল করেছে পুলিশ। ওই ক্লাবগুলিতেই দালালদের মাধ্যমে বাইরে থেকে আসা যৌনকর্মীদের অবৈধভাবে রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি করা হত। এই ক্লাবের কর্তা গৌতম বিশ্বাসেরও খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। নিষিদ্ধপল্লীর এই চরম অরাজকতা নিয়ে দায় এড়াচ্ছে শাসকদল। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ ভিন্ন। আরও পড়ুন: একেবারে দুয়ারেই পৌঁছল সরকার! শারীরিক প্রতিবন্ধীর বাড়িতে পরিষেবা নিয়ে হাজির আধিকারিক