একেবারে দুয়ারেই পৌঁছল সরকার! শারীরিক প্রতিবন্ধীর বাড়িতে পরিষেবা নিয়ে হাজির আধিকারিক
Duare Sarkar: এ যেন যথার্থই দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar)। শিবিরে শিবিরে ব্যাপক লাইন। তাতে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন অনেকে। এ অবস্থায় শারীরিক ভাবে অসুস্থ বা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীরা কেমন করে পৌঁছবেন? মুশকিল আসান করল শ্রীরামপুর পুরসভার আধিকারিকরা।
হুগলি: এ যেন যথার্থই দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar)। শিবিরে শিবিরে ব্যাপক লাইন। তাতে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন অনেকে। এ অবস্থায় শারীরিক ভাবে অসুস্থ বা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীরা কেমন করে পৌঁছবেন? মুশকিল আসান করল শ্রীরামপুর পুরসভার আধিকারিকরা। এবার দুয়ারে শিবিরে যাঁরা যেতে পারছেন না, অথচ পরিষেবা দরকার এমন মানুষদের সহযোগিতায় একেবারে বাড়িতেই পৌঁছচ্ছেন সরকারি আধিকারিকরা। তাঁদের বাড়িতে গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে নিয়ে আসছেন শ্রীরামপুর পুরসভার আধিকারিকরা।
সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে রাজ্য জুড়ে চলছে দুয়ারে সরকারের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিবির। গতবার যেমন ছিল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সংগ্রহের ভিড়, এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar) – সুবিধা নিতে ক্যাম্পে ক্যাম্পে বাড়ছে মানুষের ভিড়। কোথাও ভোর থেকে লাইন পড়ছে। কোথাও আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু অনেক মানুষই তো আছেন, যাঁদের সেই লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদনপত্র তোলা বা জমা দেওয়া সম্ভব নয়। এমনই মানুষদের বাড়ির দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছেন সরকারি আধিকারিকরা।
বুধবার শ্রীরামপুর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি হলে চলছে দুয়ারে সরকার শিবির। পুরসভার পাঁচটি ওয়ার্ডের কয়েক হাজার মানুষ সেখানে লাইন দেন। যদিও ক্যাম্পগুলিতে যাতে ৪০০-র বেশি ভিড় না হয় তা নিয়ে নয়া নির্দেশিকা আসছে নবান্ন থেকে। এদিকে প্রভাস নগর নয়ঘর কলোনির শম্ভু চ্যাটার্জি ও তার স্ত্রী শীলা চ্যাটার্জির মতো মানুষরা পড়েছেন আতান্তরে। তাঁরা দৃষ্টিহীন। এই প্রবল ভিড়ে শিবিরে গিয়ে আবেদন করা কার্যত তাঁদের পক্ষে অসম্ভব। এমন ঘটনার কাথে কানে পৌঁছতেই পদক্ষেপ করল পুরসভা।
শ্রীরামপুর পুরসভার আধিকারীকদের এই বিষয়টি সম্পর্কে জানান ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর পিন্টু নাগ। এর পর শ্রীরামপুর পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার ভাস্কর পাল একজন আধিকারিককে নিয়ে সোজদা পৌঁছে যান শম্ভু বাবু ও শীলাদেবীদের বাড়িতে।
শম্ভু চ্যাটার্জির জন্য মানবিক ও শীলা চ্যাটার্জির জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদন পত্র পূরণ করে তা নিয়ে আসেন আধিকারিকরা। প্রশাসনের এহেন পদক্ষেপে স্বভাবতই খুশি তাঁরা। পুরসভার এক্সিকিউটিভ ভাস্কর বাবু বলেন, “দুয়ারে সরকারের শিবিরে যেতে পারেননি একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন শম্ভু বাবু। উনি মানবিক প্রকল্প পাবেন। আর ওঁনার স্ত্রী লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাবেন। দু’জনের ফর্ম রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে দেওয়া হল। আমরা শিবির থেকে দিচ্ছি। কিন্তু কারও পক্ষে আসা সম্ভব না হলে আবেদন করলে, তাঁদের বাড়িতে গিয়েই ফর্ম দিয়ে আবার তা কালেক্ট করে নিচ্ছি।”
আর শম্ভু চ্যাটার্জির কথায়, “আমার কাছে এটা অকল্পনীয়। আগের বার শুনেছিলাম রাত তিনটে থেকে লাইন দিতে হয়েছিল। আমার বাড়িতে এসেছেন অফিসাররা। এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ।” শম্ভু বাবু জানান, তিনি দৃষ্টিহীন মানুষ। কোনও কাজ নেই। তবু তিনি রেশন পাননা। নতুন কার্ড করার জন্য খাদ্য দফতরে গেলে তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। প্রাক্তন কাউন্সিলর পিন্টু নাগ বলেন, “আগেরবার স্বাস্থ্য সাথীর ভিড় ছিল। এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে। তবে সরকারের এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে কেউ যাতে বাদ না পড়ে তা নজর রাখছেন সরকারি আধিকারিকরা। যাঁরা প্রতিবন্ধী বা অসুস্থ তাঁদের দুয়ারে গিয়ে পরিষেবা দিচ্ছেন পুরসভার আধিকারিকরা।” আরও পড়ুন: ‘পিছন থেকে দৌঁড়ে এসেছিল ও, ছেলের মাথার বাঁ দিকটা খুবলে নিল…’ স্বামীর কাজে ভয়ে কাঁপছেন স্ত্রীও