
বর্ধমান: পথশ্রী প্রকল্পের হতশ্রী পরিনতি! কাগজে-কলমে ১ বছর ৩ মাস আগে কাজ শুরু হলেও এক ইঞ্চিও কাজ হয়নি রাস্তার। প্রশাসনের বিভিন্ন দরজায় অভিযোগ জানিয়েও মেটেনি সমস্যা। কাটমানির অভিযোগ তুলে সরব বিরোধীরা। জল-কাদা ভেজা রাস্তায় চলাই দায়।
পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের তকিপুর গ্রামের ছবি এটা। ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে এই গ্রামের রাস্তা অনুমোদন পায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ৮০০ মিটার রাস্তার জন্য বরাদ্দ হয় মোট ৩৩ লক্ষ ১৭ হাজার ৭২৮ টাকা।
ওয়ার্ক অর্ডারে উল্লেখ করা হয় যে তিন মাসের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। সেই মতো নির্মাণকারী সংস্থার পক্ষ থেকে রাস্তা তৈরির নির্মাণ সামগ্রী (ইট, বালি, পাথর) রাস্তার পাশে মজুত করা হয়। কিন্তু সেখানেই শেষ। এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এক ইঞ্চিও রাস্তা তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বাড়ছে সমস্যা।
রাস্তার দু’পাশে নির্মাণ সামগ্রী থাকায় রাস্তাও সরু হয়েছে। দীর্ঘদিনের বেহাল এই গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে বর্ষাকালে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। স্কুলের পড়ুয়া থেকে শুরু করে অসুস্থ রোগীদের পক্ষে তো যাতায়াত করা খুবই কঠিন।
গ্রামবাসীদের দাবি, বিডিও থেকে জেলাপরিষদ, সব জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। এমনকী খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও ইমেইল মারফত অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও কাজের কোনও অগ্রগতি নেই।
বিডিও অফিসে জানতে গেলে তাঁদের একাধিকবার বিভিন্ন অছিলায় ফেরানো হয়, এমনকী তাঁদের এও বলা হয় যে পোর্টাল থেকে এই স্কিমের নামটা মুছে গিয়েছে। এ কথা শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামের মানুষজন।
সরকারি পোর্টাল থেকে একটি স্কিমের রাস্তা কীভাবে মুছে যায়, সেই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তা তৈরি করুক প্রশাসন।
তকিপুর গ্রামের এই রাস্তা নির্মাণকারী ঠিকাদার সাবির হোসেন মোল্লার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি টেন্ডার পেয়েছিলেন। সেই মতো রাস্তা নির্মাণের জন্য নির্মাণ সামগ্রী গ্রামে নামানো হয়েছিল। তাঁর পরই বিডিও নাকি তাঁকে কাজ করতে নিষেধ করেন।
টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একজন ঠিকাদারকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরই দেখা যায় পথশ্রী পোর্টাল থেকে রাস্তাটি মুছে গিয়েছে। তাই কাজ বন্ধ আছে। পোর্টাল সমস্যার সমাধান হলে পুনরায় কাজ শুরু করা যাবে বলে জানান বিডিও।
রাতারাতি পোর্টাল থেকে একটি রাস্তা কীভাবে বাদ চলে যায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র। রাস্তা না হলে আন্দোলনে নামবেন বলে জানান তিনি। যদিও বিজেপির অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ সরকারের বিষয়। খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে।’