আসানসোল : বিহারীবাবুতেই ভরসা রাখল আসানসোল। আসানসোলের মাটিতে সর্বকালীন রেকর্ড ভোটে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। প্রায় তিন লাখ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। ছাপিয়ে গিয়েছেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র মার্জিনকেও। নতুন বছরে জোড়া উপহার পেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বালিগঞ্জ থেকে বাবুল সুপ্রিয় আগেই মমতার মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন। আসানসোলেরও যা চিত্র ছিল, তাতে শত্রুঘ্নর জয় ছিল শুধুই সময়ের অপেক্ষা। অবশেষে অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে প্রায় তিন লাখ ভোটে জয়ী হলেন বিহারীবাবু।
শনিবার সকাল থেকেই নিজের হোটেলেই ছিল শত্রুঘ্ন সিনহা। এমনকী গণনাকেন্দ্র পর্যন্তও যাননি তিনি। লড়াইটা মোটেই সহজ ছিল না শত্রুঘ্নর জন্য। আসানসোলের লোকসভা আসনের এই লড়াই তৃণমূল এর আগে কোনওদিন জেতেনি। সেখানে শত্রুঘ্নর জন্য আসানসোলের মাটি একেবারেই অচেনা। তার উপর বিরোধীদের ক্রমাগত বহিরাগত আক্রমণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব চাপ সামাল দিয়ে রেকর্ড মার্জিনে জয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছেন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে।
শনিবার দুপুরে জয় মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর হোটেলের ঘর থেকে বেরোন শত্রুঘ্ন সিনহা। দলীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সেখান থেকে তিনি রওনা দেন গণনাকেন্দ্রের দিকে। ২০২৪ সালে আবার লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে তৃণমূলের এই জয় নিঃসন্দেহে রাজ্যের শাসক দলকে বাড়তি সুবিধা দেবে, অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। জয়ের পর শত্রুঘ্ন সিনহা জানিয়েছেন, “আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি, দেশের অন্যতম বড় নেত্রী এবং আমাদের সকলের প্রিয় এবং সবথেকে জনপ্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আরও উজ্জ্বল করতে। এই জয়ের কৃতিত্ব দলের সুপ্রিমোর জন্য এবং আসানসোলের আম জনতার জন্য।”
আসানসোলের মাটি রাজ্য রাজনীতিতে আপাতভাবে বিজেপির ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। কিছুদিন আগেই এখান থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল। জিতেন্দ্র তিওয়ারি পাণ্ডবেশ্বরের দাপুটে নেতা। কিন্তু তারপরও কেন বিজেপি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারল না এবারের উপনির্বাচনে? রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, আসানসোলের ভোটে বরাবরই একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে অবাঙালি ভোট। বিহত সময় বিজেপি এই অবাঙালি ভোটব্যাঙ্ককে হাতিয়ার করেই জয়ের মুখ দেখেছিল। কিন্তু এবার কৌশলী চাল খেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বিহারীবাবু শত্রুঘ্ন সিনহাকে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে প্রাথী করেন তিনি এবং তাতেই বাজিমাৎ।