
মেদিনীপুর: মেলেনি কোনও সুযোগ-সুবিধা। আবাস হোক বা অন্য কোনও প্রকল্প, গ্রামের আদিবাসী পরিবারগুলি তা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত। অবশ্য ভুল যে একটা হয়েছে, তা স্বীকার করে নিলেও, দায়টা কার এই নিয়ে এখন বল ছোড়াছুড়ি করছে শাসকগোষ্ঠী।
ঘটনা মেদিনীপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কামারআড়া এলাকার। সেখানে মোট ২৫টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। যাদের অভিযোগ, সরকারি সমস্ত প্রকল্প থেকে তারা বঞ্চিত। তাদের অভিযোগ, “লক্ষ্মীর ভান্ডার মিলছে, কিন্তু মাথার উপর ছাদ নেই। আবাসের প্রকল্পের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে, সমস্ত তথ্য দেওয়া হয়েছে, তারপরেও কিছু হয়নি। বছরের পর বছর শুধু প্রতিশ্রুতিই মিলেছে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি।”
‘বঞ্চনা’ কতদিনই বা সহ্য করা যায়? সহ্য করতে পারেনি ওই ২৫টি পরিবারও। যথারীতিই তারা গিয়ে দ্বারস্থ হয় মেদিনীপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সৌমেন খানের কাছে। নিজেদের যাবতীয় সমস্যার কথা তুলে ধরেন ‘দুস্থরা’। এদিন তিনি বলেন, “মানুষগুলো যে এই ভাবে রয়েছেন, তা আমরা ভাবতেও পারিনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় জটের কারণেই এতদিন আবাসের কাজ আটকে ছিল। মুখ্য়মন্ত্রী এখন পৌরসভাগুলিকে আবেদন গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরাও ওদের আবাস-আবেদন জমা নিয়েছি।”
এরপরেই ভুল স্বীকার করে নিয়ে পৌর প্রধান বলেন, “আমাদের একটা গাফিলতি নিশ্চয়ই রয়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণ ঠিক মতো করিনি। যাদের বাড়ি আগে প্রয়োজন ছিল, তারা পায়নি। আমরা ঠিক মতো পর্যবেক্ষণ করিনি। যাদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তারা আবাসে বাড়ি পেয়েছে।” বলে রাখা প্রয়োজন, এই পর্যবেক্ষণের মধ্যেই দিয়ে তালিকা পাঠিয়ে থাকেন কাউন্সিলররা।
ওই আদিবাসী পরিবারগুলি যে বঞ্চিত সেই কথা মেনে নিয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ পানিগ্রাহী। তাঁর দাবি, “ওই মানুষগুলির সমস্ত অসুবিধায় প্রশাসন তাদের পাশে থেকেছে। কিন্তু কিছু গাফিলতি থেকে গিয়েছে। যখন আবাসের তালিকা হয়েছিল, তখন ওই মানুষগুলির কাছে যথাযথ নথির অভাবে আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু এখন শুনলাম দরখাস্ত নেওয়া হয়েছে। এবার চেয়ারম্যান কীভাবে কাউন্সিলরকে এড়িয়ে এই দরখাস্ত জমা নিলেন তা আমার জানা নেই। আমার মনে হয় গোটা প্রক্রিয়াটা এই ভাবে চলে না। আমি এই ভাবে কাগজ নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কাউকে দিতে চাই না।”