দাসপুর: ৫৮ বছর ধরে রাজনীতির ময়দানে। শুরুটা হয়েছিল ১৯৬৫ সালে। সেই থেকে এখনও অপরাজিত। এবার আবার প্রার্থী হয়েছেন পঞ্চায়েতে। এতদিনে অবশ্য বয়সটা অনেক বেড়েছে। এখন ৮৮-তে দাসপুরের গোপালচন্দ্র নন্দী। পুরনো একটা মাটির বাড়িতেই থাকেন। সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই একটা বাঁশের খুঁটির উপর ভর করে পথচলতি পরিচিত মুখ দেখলেই বলছেন, ‘পঞ্চায়েতে আবার প্রার্থী হয়েছি। তোমাদের সবার শুভেচ্ছা কামনা করি।’ এলাকার লোকেরা বলে, জীবনে নাকি হারতে শেখেননি তিনি। কখনও দলীয় প্রতীকে দাঁড়িয়েছেন, কখনও আবার নির্দল হয়ে। কিন্তু ভোট ময়দানে প্রতিবারই জয় ছিনিয়ে এনেছেন। আর এবারও জয়ের ব্যাপারে বেশ নিশ্চিত তিনি।
রাজনীতিতে যখন পা রেখেছিলেন, তখন ছিলেন কংগ্রেসে। তখন থেকে আজ অবধি পঞ্চায়েতে হারেননি তিনি। কখনও গ্রাম পঞ্চায়েতে, আবার কখনও পঞ্চায়েত সমিতিতে লড়েছেন। যতবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন, ততবারই জিতেছেন। এখনও অবশ্য তিনি তৃণমূলে। এবার দাসপুর-১ ব্লকের গোবিন্দনগর পশ্চিম বুথ থেকে ভোটে লড়ছেন তিনি। তৃণমূলের টিকিটেই। আদ্যোপান্ত সাধাসিধে মানুষ বলেই তাঁকে চেনেন গ্রামবাসীরা। এতদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকে, টানা ভোটে জিতেও, সেই মাটির মানুষই রয়ে গিয়েছেন। থাকেন একটি মাটির বাড়িতে। একটা পুরনো সাইকেল নিয়েই ঘুরে বেড়ান। বয়সের ভারে নুব্জ হলেও, সাইকেলে চেপে গ্রাম চষে বেড়ান। মানুষের সুখ-দুঃখের কথা শোনেন। মানুষের পাশে দাঁড়াতে এই বয়সেও ছুটে বেড়ান তিনি।
কিন্তু এত বয়সেও কেন ভোটে দাঁড়াচ্ছেন তিনি? প্রশ্ন করায় বললেন, ‘রাজনীতি করার কথা নয়। কিন্তু মানুষের সেবা করার জন্যই আছি। একটা কাজের মধ্যে থাকলে, শরীর ও মন দুই-ই ভাল থাকবে। পাঁচজনের শুভেচ্ছা পাব। ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাব।’ এলাকাবাসীরও বলছেন, দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছেই তিনি জনপ্রিয়। তাঁদের কথা, ‘ভালবেসে মানুষ তাঁকে ভোট দিচ্ছে। গ্রামের সকলের সুখ-দুঃখ সবকিছুই দেখছেন তিনি।’
তাঁর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ানো কংগ্রেস প্রার্থী অংশুমান মাঝিও বলছেন, ‘কংগ্রেস আমলে তিনি যা কাজ করেছিলেন, সেই কারণেই তিনি এখনও জিতে যাচ্ছেন।’