পশ্চিম মেদিনীপুর: বাবুলের ভোলবদলের দিনই রেল শহরে দাঁড়িয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) ‘উল্টো সুর’ গাইলেন হিরণ (Hiran Chatterjee)! রেলের কাজের সমালোচনা করে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তিনি।
বিজেপির সাংসদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগদান করেছেন। সূত্রের খবর, তাঁকে আগামীদিনে বাংলায় ‘বড় দায়িত্ব’ দিতে চলেছে তৃণমূল! আর, এদিনই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘গড়’ হিসেবে পরিচিত রেলশহর খড়্গপুরে দাঁড়িয়ে সুর চড়ালেন খড়্গপুর সদরের জনপ্রিয় বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রেলের ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারদের কাজের সমালোচনা করে “মানুষের পাশে থাকার” ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলেন!
তিনি বললেন, “ভারতীয় রেলের আমি সমালোচনা করব না। দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান। রেলমন্ত্রীও অত্যন্ত সজ্জন ও ভালো মানুষ। তিনি আমাকে বলছেন, বাংলার জন্য ভালো কাজ করতে চান। কিন্তু, রেলের যে অফিসাররা এখানে ফুট ওভার ব্রিজের কাজ করাচ্ছেন শ্রমিকদের ন্যূনতম নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে, গরিব মানুষদের উচ্ছেদ করে, তার বিরোধিতা না করে পারছি না।”
তাঁর সংযোজন, “এখানে, রেলের বড় কাজ চলছে, অথচ কোন অফিসার বা ইঞ্জিনিয়ারদের দেখা নেই। শ্রমিকদের মাথায় হেলমেট নেই। অথচ প্রতিদিন নানা দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে! কিছু দোকানদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, কিছুদের রেখে দেওয়া হয়েছে! এইভাবে কি উন্নয়নের কাজ হয়? আমি খড়্গপুরের সকল মানুষের বিধায়ক। তাই, সকল মানুষের পাশে থাকা আমার কর্তব্য।”
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই রেলের কাজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। খড়্গপুর শহরে রেলের পক্ষ থেকে যে তিনটি ওভারব্রিজ করা হচ্ছে, তা পুজোর আগেই উদ্বোধন করার ইঙ্গিতও দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। খড়্গপুর শাখার ডি এর এম’এর কাজে খুশি হয়ে তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। শনিবার তাঁর ঠিক উল্টো সুরেই রেলের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের সমালোচনা করলেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়!
তবে কি, সুকৌশলে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘বিরোধিতা’ করে তিনিও কোনও ইঙ্গিত দিতে চাইলেন? জল্পনা শুরু রাজনৈতিক মহলে! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তথা পিংলার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক অজিত মাইতি বলেন, “বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গেছে। দিলীপ ঘোষ কয়েকদিন আগে উচ্চস্বরে চিৎকার করছিলেন রেল এই কাজ করছে- সেই কাজ করছে। আজ তার দলের বিধায়ক হিরণ পৌঁছে বিরোধিতা করলেন। ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, রেল নিধিরাম সর্দারের মত কাজ করছে। কোন ইঞ্জিনিয়ার নেই, কোনো স্টাফ নেই, ভালো কিছু পরিকল্পনা নেই। ধন্যবাদ হিরণকে কেন্দ্রীয় সরকার বা রেল দফতরের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, মুখ খুলেছেন।”
আরও পড়ুন: Babul Supriyo: সাংসদের ‘রংবদল’-এ হতাশ কর্মীরা, আসানসোলে বাবুলের ছবিতে জুতো-ঝাঁটা! জ্বলল আগুন