পশ্চিম মেদিনীপুর: সিতাই-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এ নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী মঙ্গলবার বিধানসভায় সরকারি প্রস্তাব আনা হচ্ছে। আর এই প্রেক্ষিতে পুরো বাংলাকেই এই বিএসএফের নজরদারিতে আনা উচিত বলে মন্তব্য করলেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বললেন, পুরো বাংলার ক্ষমতা সেন্ট্রাল বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া উচিত!
শুক্রবার জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের জগদ্ধাত্রী পুজো উদ্বোধন এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পুজো উদ্বোধনের পর জেলা পার্টি অফিসে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিরোধী দলনেতা। সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের বিএসএফ ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বিএসএফের ক্ষমতা বাড়বে না কমবে সেটা সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্র ঠিক করবে। এটা কেন্দ্রের ব্যাপার।
শুভেন্দুর কথায়, “দিনহাটাতে গরু চুরি করতে গিয়েছিল। দেখুন, বিএসএফ মেরেছে দুম করে।” এরপর বিএসএফ- এর ক্ষমতা সীমান্ত থেকে ১৫ থেক ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করা নিয়ে সুর চড়ানোর পর বিজেপি বিধায়ক বলেন, এবার জন্মনিয়ন্ত্রণের আইন আনতে হবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাজ্যের হস্তক্ষেপের কোন ব্যাপার না। কোনও কোনও রাজ্য অভিযোগ জানাতে পারে। কিন্তু সেটা আদৌ টিকবে না। আইনি পথে চলবে কেন্দ্র জবাব দেবে। শুভেন্দু যোগ করেন, “আমরা জানি, কেন কারা এই ক্ষমতা নিয়ে বিরুদ্ধ বক্তব্য রাখছেন। কারণ, দুধেল গাই-রা ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে এদের। কিন্তু সনাতনী হিন্দুরা একমাত্র বিজেপিকে ভোট দিয়ে বিরোধী দলের আসনে বসিয়েছে।”
শুভেন্দু আরও যোগ করেন, এছাড়া প্রায় সময় বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা সঙ্গে জেএমবি (JMB)-র মত জঙ্গী সংগঠন এখানে লুকিয়ে থাকে। শিক্ষক ও ডাক্তার সেজে। পশ্চিম বাংলা তাদের শেল্টার দিয়ে এসেছে এতদিন। তাই তাদের আটকানোর জন্য বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি ছিল। তার পরই শুভেন্দুর মন্তব্য, “শুধু ৫০ কিলোমিটার কেন, মজিদ মাস্টারের মতো জঙ্গিরা এখানে লুকিয়ে থাকলে সেই জঙ্গিমুক্ত করতে পুরো পশ্চিমবাংলাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া উচিত বলেই মনে করি।”
উল্লেখ্য গত বছরের এপ্রিল মাসে ঢাকার গাবতলি এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে বঙ্গবন্ধু খুনের অন্যতম অভিযুক্ত আবদুল মাজেদকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে আদালতে পেশ করা হলে মাজেদ জানায়, ২৪ বছর কলকাতায় আত্মগোপন করে ছিল সে। গ্রেফতারের ১ সপ্তাহের মধ্যে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করে হাসিনা সরকার। এ নিয়েও তৃণমূলকে নিশানা করেন শুভেন্দু।
বলেন, “যদিও বিরোধী কংগ্রেস সিপিএম এবং তৃণমূল চাইছে পুরো বাংলাটাকে অরক্ষিত রাখতে। এতদিন ধরে তাই প্রথমে সিপিএম, পরে তৃণমূল সরকার মজিদ মাস্টারের মত খুনিদের এই বাংলায় শেল্টার দিয়ে রেখেছিল। পরে বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ তাদের গ্রেফতার করে।”
আরও পড়ুন: BSF: সিতাইকাণ্ডকে সামনে রেখেই বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে প্রস্তাব আনা হচ্ছে বিধানসভায়