
সবং: রাস্তা হাল এমন যে আসতে পারে না অ্যাম্বুলেন্স। কোনওভাবে দেড় কিলোমিটার পার করতে পারলে তবে ওঠা যেতে পারে অ্যাম্বুলেন্সে। পরিবারের লোকজন চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা আর হল না। ঠিক সময়ে পৌঁছান গেল না হাসপাতালে। শেষ হয়ে গেল ক্লাস টেনের মেয়েটার জীবনটা। অন্য কোথাও নয়, এমন ঘটনা ঘটেছে এই বাংলার বুকেই। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের ভেমুয়া অঞ্চলের বসন্তপুরে।
বেহাল রাস্তার কারণে সময়ে পৌঁছাতে পারল না হাসপাতালে। প্রাণ গেল দশম শ্রেণির ছাত্রী পিংকি পাড়ির (১৬)। তবে পিংকির গল্পটা আরও বেশি মন খারাপ করে দিতে পারে আপনার। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে শনিবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন পিংকি। বাড়ির লোকজনই দরি কেটে নামান। তখনও দেহে ছি প্রাণ। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু, কে জানত চেষ্টা করলেও পথে অপেক্ষা করে আছে আরও বড় বিপদ!
অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলেও তা ঢুকে পারেনি বাড়ির কাছে। বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন দেড় কিলোমিটার রাস্তা দোলনায় চাপিয়ে নিয়ে যান পিংকিকে। তারপর গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ততক্ষণে সব শেষ। দেখা মাত্রই চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিলেন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
ঘটনায় ব্যাপক চাপানউতোর শুরু হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। বারবার জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছে বিজেপি। জেলা বিজেপি সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, “এই মৃত্যুর দায় প্রশাসনের। মানুষ ভোট দিয়ে যে মন্ত্রীকে জেতায়, তার এলাকায় এই অবস্থা লজ্জার।” অন্যদিকে সবং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তরুণ মিশ্র যদিও বলছেন, “সবংয়ের বেশিরভাগ রাস্তাই হয়েছে, কিছু বাকি রয়েছে। তবে এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”