পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে ফের রাজ্য সরকারকে নিশানা করলেন খড়গপুরের সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয়দের বিশেষ করে বাঙালিদের দেশে ফেরানোর প্রসঙ্গে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা। মমতার সরকারকে কার্যত তালিবান শাসনের প্রেরক বলেই নির্ঘোষ দিলীপের।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে (Mamata Banerjee) কটাক্ষ হেনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “আফগানিস্তানে যাঁরা আটকে রয়েছেন তাঁদের ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট কেন্দ্র সরকার। মোদীজি ঠিক সকলকে ফিরিয়ে আনবেন। আবারও বলছি, মোদীর উপর ভরসা করুন। দিদির উপর ভরসা করলে তালিবানদের গুলি খেতে হবে।” কার্যত, বিজেপি রাজ্য় সভাপতির এ হেন মন্তব্যে উত্তেজনা রাজনৈতিক মহলে। বর্তমান আফগানিস্তান ইস্যুতে এইভাবে সরাসরি রাজ্য সরকারকে নিশানা করা ভালভাবে দেখছেন না সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। অনেকের মতে, এই ধরনের মন্তব্য় বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত ‘স্পর্শকাতর’। সেখানে ব্যক্তিক রাজনীতিকে গুরুত্ব না দিয়ে সরকারের উচিত এই কঠিন অবস্থার মোকাবিলা করা।
তালিবান ত্রাসে কাঁপছে আফগানিস্তান। সেদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে উদ্য়োগী ভারত সরকার। ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে ই-ভিসা। যাতে ফাস্ট ট্র্যাকের ভিত্তিতে আটকে পড়া নাগরিকদের ভিসা দ্রুত মঞ্জুর হয়। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিচার করেই এই ভিসা চালু করা হয়েছে। অন্যদিকে, বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাংলার অন্তত ২০০ জন মানুষ এখনও আটকে রয়েছেন আফগানিস্তানে। মূলত দার্জিলিং, তরাই এবং কালিম্পঙের বাসিন্দা তাঁরা। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী একটি চিঠি লিখছেন বিদেশ মন্ত্রকে। আটকে থাকা বঙ্গবাসীদের ফিরিয়ে আনার যাতে দ্রুত বন্দোবস্ত করা হয়, সেই মর্মে এই চিঠি লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা।
পাশাপাশি, তিনি এও বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমার মনে হয় এই সময় বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুলে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতির উপরই নজর দেওয়া উচিত। আপাতত আমাদের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে। এবং যা করার ভারত সরকারকেই করতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রী বস্তুত স্পষ্ট করে দেন, তিনি এই বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে অবস্থান সাফ না করার জন্য বাকি বিরোধীরা যতই চাপ দিক না কেন, তৃণমূল নেত্রী বৈদেশিক বিষয়ে কেন্দ্রের উপরই নির্ভর করতে চলেছেন।
যদিও এই মুহূর্তে, কাবুল-সহ আফগানিস্তানের অন্যান্য় প্রদেশে কত সংখ্যক ভারতীয় আটকে রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, সংখ্যাটা আনুমানিক ১৫০০-২০০০ হলেও হতে পারে।আপাতত গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যেই প্রতিক্ষণ যাপন করছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। আরও পড়ুন: নো ম্যানস ল্যান্ড: ওপারে রইল খুলনা, ভারতের স্বাধীনতা দিবসে মুর্শিদাবাদে উড়ল পাকিস্তানের পতাকা