
পশ্চিম মেদিনীপুর: মে মাসে পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে পূর্ত দফতরের কাজ দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। রীতিমত পূর্ত দফতরের কর্মীদের বকাঝকাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দাবি করেন গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে তাঁদের তরফে। সেই ঘটনার এক মাস কাটতে না কাটতে প্রশ্নের মুখে পড়ল পূর্ত দফতরের ভূমি। প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধনের আগেই দেখা গেল ফাটল ।
সালটা ২০১৪। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার পড়ুয়াদের শিক্ষার ব্যবস্থার সুবিধার জন্য ঘোষণা করেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেই কথা মতো কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। অর্থাৎ ২০১৭-তে ওয়ার্ক অর্ডার পায়। এর ঠিক দু’বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০১৯ কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়। ওই বছরই বিশ্ববিদ্যালয়কে পিডব্লিউডি (PWD) হস্তান্তর করে দেয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখা গেল ভবনের একাধিক জায়গায় ফাটল। শুধু তাই নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পণ্ডিত রবিশঙ্কর ভবনের একাংশ হেলে গিয়েছে বলেও দাবি করেছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলত, প্রশ্ন উঠেছে পূর্ত দফতরের ভূমিকা নিয়েই।
প্রসঙ্গত, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট অ্যান্ড মিউজিক বিভাগের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হয়নি ভবনটির। তবে এরই মধ্যে দেখা গিয়েছে বড়-বড় ফাটল। ভবনের বাইরের অংশে যেমন ফাটল দেখা গিয়েছে , তেমনই চিড় ধরেছে ভবনের ভিতরের দেওয়ালেও। ভবনটি এই মুহূর্তে ব্যবহার করা যথেষ্ট বিপজ্জনক বলেই মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পূর্ত দফতরের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে গোটা বিষয়টি। পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দাবি, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে তাঁদের তরফে।
বস্তুত, গত মাসে জেলা সফরে এসে পূর্ত দফতরের বিভিন্ন কাজ নিয়ে একরাশ অসন্তোষ প্রকাশ করেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একই সুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গলাতেও। বারবার কেন পূর্ত দফতরের কাজ প্রশ্নের মুখে পড়ছে! প্রশ্ন এড়িয়েছেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। সবমিলিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালের পণ্ডিত রবিশঙ্কর ভবনটি কতদিনে ব্যবহারযোগ্য হয়ে ওঠে সেটাই এখন দেখার!
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান সজল দাস বলেন, ‘বিল্ডিং-এর একটি পাশ হেলে গিয়েছে। যতক্ষণ না বিল্ডিং না খোলা হবে ততক্ষণ বুঝে ওঠা যাচ্ছে না কোথায় কোথায় এই সমস্যা হয়েছে। আমরা কথা বলেছি। যত শীঘ্র সম্ভব এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’ অন্যদিকে, পূর্ত কর্মাধক্ষ্য নির্মল ঘোষ বলেন, ‘বিষয়টি নজরে এসেছে। ২০১৯ সালে বিল্ডিং তৈরি হয়ে যায়. তারপর থেকে এটি ব্যবহার হয়নি। যার কারণে ইঁদুর ঢুকে যায় বিল্ডিং এর মাটিতে। সেই কারণে মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। এটায় ভয়ের কারণ নেই। খুব দ্রুত এটি করা ঠিক করে দেওয়া হবে।’