চন্দ্রকোনা: বয়স আঠারো পেরোয়নি। তবুও জোর করে বিয়ে দিচ্ছিল বাবা-মা। প্রথমে কোনওভাবে আটকালেও পরে আবার জোরাজোরি। এবার তো সোজা পিসির বাড়ি নিয়ে গিয়ে মেয়েকে পাত্রস্থ করতে চেয়েছিল পরিবার। তবে ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নয় নাবালিকাও। সোজা ফোন করল বিডিওকে। জানাল, ‘স্য়র কোনওভাবে আমার বিয়েটা আটকান।’
পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা। সেখানে মাত্র সতেরো বছরের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় করে তার বাবা মা। প্রথম থেকেই অমত ছিল নাবালিকা পড়ুয়ার। বিয়ে না করে পড়াশোনা করে। শেষমেশ নাবালিকা নিজের বিয়ে বন্ধ করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয় পুলিশ থেকে বিডিও। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয় বিয়ে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চন্দ্রকোনা দু নম্বর ব্লকের নীলগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল। পেশায় কৃষক। তার মেয়ে বাসন্তী মণ্ডল পলাশচাপড়ি নিগমানন্দ উচ্চ বিদ্যালয় ক্লাস ইলেভেনের ছাত্রী। ১৭ বছরের বাসন্তীর বিয়ে দিতে চায় পরিবারের সদস্যরা। প্রথমে বাসন্তী বিষয়টি তার স্কুলের শিক্ষকদের জানান স্কুলের শিক্ষকরা মেয়েটির বাবার সঙ্গে কথা বললেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। এরপর শনিবার হঠাৎ পরিবারের সদস্যরা বাসন্তীকে চন্দ্রকোনা থেকে ঘাটালে আত্মীয়র বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে সোনা কারিগর এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়া হবে। শেষমেশ বিয়ে বন্ধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে নাবালিকা।
নিজের চেষ্টায় ব্লকের বিডিও উৎপল পাইকের ফোন নম্বর জোগাড় করে। তারপর সটান ফোন। খবর পেয়ে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ ও ব্লকের বিডিও গিয়ে উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। সঙ্গে মুচলেখাও লিখিয়ে নেন। এ প্রসঙ্গে বিডিও বলেন, “মেয়েটি বলল স্যর কিছু করুন। নয়ত ওরা বিয়ে দিয়ে দেবে। মেয়েটা আসলে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়।”