
ঘাটাল: তৈরি হওয়ার পর সাত বছর কেটে গিয়েছে। এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী তৈরি করেছিলেন কর্মতীর্থ। তাঁর সেই স্বপ্নের প্রকল্পের পরিণতি যা হল, তা ভাবাও যায়নি। কাজ তো দূরের কথা। দিনে দিনে ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে সেই কর্মতীর্থের ভবন। রাত বাড়লে চলে অসামাজিক কার্যকলাপ। লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল সেই কর্মতীর্থ। বর্তমানে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র চলে সেই ভবনে। বিরোধীদের অভিযোগ এভাবে সরকারি টাকার অপব্যবহার করা হয়েছে। কর্মসংস্থানের নামে মানুষকে ঠকানো হয়েছে। বিরোধীদের তোলা অভিযোগ উড়িয়ে আবারও কর্মতীর্থ দ্রুত চালু করার আশ্বাস দিয়েছে শাসকদল ও তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ন্তীপুর এলাকায় চন্দ্রকোনা-২ ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছিল কর্মতীর্থ। ২০১৬ সালে এই কর্মতীর্থের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যায়। আজ ৭ বছর পর কর্মসংস্থানের কোনও ব্যবস্থাই হয়নি বলে অভিযোগ।
ওই কর্মতীর্থে বিদ্যুৎ থেকে পানীয়জল, শৌচাগার- সব ব্যবস্থাই আছে। আগাছা থেকে ঝোপঝাড়ে ঢেকেছে এই সেই বিশাল ভবন। ভিতরে আশ্রয় নিয়েছে পায়রারা। বেশ কয়েকটি ঘরে দরজা ভেঙে গিয়েছে, ভেঙে ফেলা হয়েছে আলো থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের সামগ্রীও। কর্মতীর্থের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মদের বোতল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে বসে নেশার আসর, চলে অসামাজিক কার্যকলাপ।
২-৩ বছর হল এই কর্মতীর্থ কৃষকদের থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কেন্দ্র তৈরি হয়েছে ওই ভবনে। দিনের বেলা দুজন কর্মী যান। কৃষকদের থেকে ধান কেনার কাজ করলেও সেখানে স্থায়ীভাবে কেউ থাকেন নায ধান ক্রয় কেন্দ্রের ডিও তথা ডিসবার্সমেন্ট অফিসার মহম্মদ তাহিরউদ্দিন জানান, কর্মতীর্থের পরিবেশের জন্যই কেউ সেখানে থাকতে চান না।
ওই ভবনের বেহাল দশা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার অভাবকেই কাঠগড়ায় তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, তৃণমূল সরকারি প্রকল্পের নামে সাধারণ মানুষকে ভাঁওতা দিচ্ছে। কর্মতীর্থ বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছে সেটা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান চন্দ্রকোনা-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রসূন ঘোষ। চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অলোক ঘোষ বলেন, আমি সভাপতি হওয়ার পর বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আগামিদিনে যাতে ওই প্রজেক্টটি সফল করা যায়, তারজন্য আমি বিডিও সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।