খড়্গপুর: বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) খড়্গপুর স্টেডিয়ামে ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে কারিগরি শিক্ষায় সফলদের নিয়োগ পত্র বিতরণের সভায় একাধিক কর্মসংস্থানের দিশা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোর আগেই সব জেলায় মিলিয়ে যেমন ৩০ হাজার কর্মসংস্থানের কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেমনই একই মঞ্চ থেকে ফের চপ শিল্পের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহের পরামর্শ দিলেন তিনি।
“কোনও কাজই ছোট নয়” দাবি করে, চা-বিস্কুট, ঘুগনি, তেলেভাজা থেকে শুরু করে রাস্তা থেকে কাশফুল কুড়িয়ে নিয়ে ব্যবসা করার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “আমার কথা শুনে অনেকেই টিটকিরি দেন। আমি বলছি, আপনি এক হাজার টাকা নিন, তা দিয়ে একটা কেটলি কিনুন আর কয়েকটা মাটির ভাঁড় নিন। সঙ্গে কিছু বিস্কুট রাখুন। আস্তে আস্তে বাড়বে। প্রথম সপ্তাহে বিস্কুট নিলেন, তারপরের সপ্তাহে মাকে বললেন, একটু ঘুগনি তৈরি করে দাও। তারপরের সপ্তাহে একটু তেলেভাজা করলেন। একটা টুল আরেকটা টেবিল নিয়ে বসলেন। এই তো পুজো আসছে, দেখবেন লোককে দিয়ে কুলোতে পারবেন না। আজকাল এত বিক্রি আছে। কোনও কাজ জীবনে ছোট নয়। যত বড় মানুষ আছেন তাঁরা সকলেই মাটি থেকে উঠেই বড় হয়েছেন, এটাই তাঁদের কাহিনি। এটাই তাঁদের গর্ব।”
পুজোর সময়ে ঝালমুড়ির ব্যবসাও অত্যন্ত লাভজনক হবে বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কেউ যদি ব্যঙ্গ করে বলে তুই এটা করছিস? বলবেন এভাবেই আমি কোটিপতি হব।” চা-ঘুগনি-তেলেভাজা-ঝালমুড়ির দোকানের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বাড়িতেই ছোট দোকান খুলে ব্যবসা শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “আপনারা যাঁরা স্কিল ট্রেনিং নিয়ে এলেন, তাঁদের বলব, বাড়িতেই দোকান করে কাজ করুন। কিন্তু একটু খেটে খেতে হবে, শরীরের নাম মহাশয়।” তিনি বলেন, বাড়ির মধ্যেই একটি ছোট বিউটিপার্লার খুললেও ধীরে ধীরে সেই পার্লার বড় ব্যবসায় পরিণত হতে পারে।
এমনকি, একটি টাকাও বিনিয়োগ না করে ব্যবসা করা যেতে পারে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রাস্তায় কাশফুল পড়ে থাকে। বিনামূল্যে সেই ফুল তুলে নিয়ে দিয়ে, তা দিয়ে বালিশ-লেপের মতো পণ্য তৈরি করা যেতে পারে। অনেকেই কাশফুলের লেপ-তোষক পছন্দ করেন বলে দাবি করেছেন তিনি। মমতা বলেন, “মনে রাখবেন, আমি বিত্তমান হতে চাই না, আমি বিবেকবান হতে চাই। মনে রাখবেন আজ আছি, কাল নেই। আমার একটা ঘর আছে, বিছানা আছে, বাথরুম আছে…আর কী চাই?”
এর পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুজোর আগেই সব জেলা মিলিয়ে মোট ৩০ হাজার জনকে চাকরির সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এছাড়া আগামী দিনে ৮৯ হাজার শিক্ষকও নিয়োগ করা হবে। স্কিল ট্রেনিং নিয়েছেন যাঁরা তাঁরা শিক্ষকতাও করতে পারবেন। তিনি দাবি করেন ইতিমধ্যেই তাঁর সরকার ২ লক্ষ ৬৩ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছে। কলেজে নিয়োগ পেয়েছেন ১০ হাজার প্রফেসর। দেউচা পাচমির কয়লা খনিতেও ১ লক্ষের বেশি যুবক চাকরি পাবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।